হাক্কানির সঙ্গে সংলাপে পাকিস্তানকে চাপ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশ : ১৯ জানুয়ারি ২০১৮, ১৮:২২

সাহস ডেস্ক

প্রকাশ্যে আফগান তালেবান ও হাক্কানি নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও গোপনে জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য পাকিস্তানকে তাগিদ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

সংশ্লিষ্ট সূত্রকে উদ্ধৃত করে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন এই দাবি করেছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযান তত্ত্বাবধানকারী মার্কিন শীর্ষ কমান্ডার জেনারেল জোসেফ ভোটেল হাক্কানিকে আলোচনায় বসাতে রাজি করানোর জন্য পাকিস্তানি সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়াকে তাগিদ দিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্র আর তাদের মিত্রদের ধারাবাহিক অভিযোগ, আফগান তালেবান ও তাদের মিত্র হাক্কানি নেটওয়ার্ককে পাকিস্তানে ‘নিভৃত আবাস’ গড়ে তোলার সুযোগ করে দিয়েছে ইসলামাবাদ। নতুন বছরের টুইটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মিথ্যাচার ও সন্ত্রাসবাদে মদদের অভিযোগ তুলে পাকিস্তানে সহায়তা বন্ধের হুমকি দেওয়ার পর ৫ জানুয়ারি নিরাপত্তা সহযোগিতা স্থগিতের ঘোষণা দেয় ওয়াশিংটন। হাক্কানি নেটওয়ার্ক, তালেবান ও লস্কর-ই-তৈয়বার মতো জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে পাকিস্তান তহবিল যুগিয়ে যাচ্ছে বলে ক্রমাগত অভিযোগ করে যাওয়ার পরও দেশটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ছিন্ন হয়নি। ট্রাম্পের ঘোষণার পরও মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার কথা জানিয়েছেন। বলেছেন, সহায়তা স্থগিত সাময়িক। এইবার এক পাকিস্তানি কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে এক্সপ্রেস ট্রিবিউন দাবি করেছে, প্রকাশ্যে হাক্কানি নেটওয়ার্ককে চাপ দেওয়ার কথা বললেও গোপনে যুক্তরাষ্ট্র চাইছে পাকিস্তান ও জঙ্গি সংগঠনগুলোর নেতারা আলোচনার টেবিলে বসুক।

এই আলোচনার সঙ্গে সরাসরিভাবে সংশ্লিষ্ট ওই কর্মকর্তা বলেন, ট্রাম্পের টুইট অনুযায়ী এখনও কোনও নির্দেশনা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আসেনি। তিনি বলেন, তাদের একমাত্র দাবি ছিল যে পুনরায় যেন আলোচনা প্রক্রিয়া শুরু হয়।’ তবে পাকিস্তান তাতে রাজি হয়েছে কি না সেটি তার কাছ থেকে জানা যায়নি। ওই কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের মূল পার্থক্য হলো আমরা রাজনৈতিক সমাধান চাই আর যুক্তরাষ্ট্র চায় সামরিক।

যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে শান্তি আলোচনার তাগিদ দিয়েছে দাবি করে ওই পাকিস্তানি কর্মকর্তা জানান, সম্প্রতি তিন সদস্যের তালেবান প্রতিনিধি পাকিস্তানে আলোচনার ক্ষেত্র দেখে গেছে। এই সফর আলোচনার অংশ কি না সেটি নিশ্চিত করে কিছু বলেননি ওই কর্মকর্তা। উড়িয়ে দেননি সম্ভাবনাও।

প্রসঙ্গত, ৯/১১ হামলার পর ২০০১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। আল কায়েদাকে সমর্থন ও আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী ওই যুদ্ধে তালেবানরা ক্ষমতা থেকে উৎখাত হলে মার্কিন সমর্থনে সেখানে নতুন সরকার গঠিত হয়। কয়েক দফা সাধারণ নির্বাচনে সেই ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও ১৬ বছরেও শেষ হয়নি সন্ত্রাসবাদ বিরোধী যুদ্ধ।

সাহস২৪.কম/জুয়েনা/আল মনসুর 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত