তামিমের ব্যাটিংয়ে নামার মূল পরিকল্পনাকারী মাশরাফি

প্রকাশ : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৫:৪৮

সাহস ডেস্ক

এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার স্বিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে ৪ বলে ২ রান করে ডান হাতে হাতে চোট পেয়ে নট আউট থেকে মাঠ ছাড়েন সেরা ওপেনার তামিম। পরে মুশফিকের সাথে ঝুটি বাধেন মিথুন। ৬৩ রানে মিথুন আউট হয়ে গেলে মুশফিকের সাথে আর কোনো ব্যাটসম্যান ঝুটি বাঁধতে পারেনি। সর্বশেষ মোস্তাফিজ নামার পর মুশফিক সেঞ্চুরি করেন। পরে মোস্তাফিজ আউট হয়ে প্যাবিলিয়নে ফিরে যায় তখন ৩.১ ওভার বল বাকি। ঠিক তখনি মুশফিকের শক্তি যোগাতে মাঠে নেমে আসে হাতে ব্যান্ডিস করা সেরা ওপেনার তামিম ইকবাল। তামিম মাঠে নেমে এক হাত দিয়ে এক বল খেলে ৪৬ ওভার পুরন করেন। পরে মুশফিক স্টাইকে এসে শ্রীলঙ্কানদের বলে রানের ঝড় তোরেন ক্ষুদে মাষ্টার মুশফিক।

যদিও তামিমের ব্যাটিংয়ে নামার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন মাশরাফি। তামিম নিজেই সংবাদ মাধ্যমকে জানালেন সেই কথা। তবে মাশরাফির পরিকল্পনা ছিল মুশফিক স্ট্রাইকে থাকলেই কেবল ব্যাটিংয়ে নামবেন তামিম। অন্যথায় নয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত স্ট্রাইকেই নামতে হয়েছে সেরা এই ওপেনারকে! কঠিন এই সিদ্ধান্তটি অবশ্য নিজেই নিয়েছেন দেশসেরা ওপেনার।

কব্জির ভাঙা হাড় নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশের ম্যাচের মুহূর্তটাই বদলে দিয়েছেন ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি রান করা তামিম। দেশ সেরা ওপেনারকে এক পাশে রেখে মুশফিক লঙ্কান বোলারদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছেন রীতিমত। শেষ ১৫ বলে মুশফিক ৩২ রান তুলে স্কোর বোর্ড করেন সমৃদ্ধ। এক কথায় তামিমের ক্রিজে নামাই মুশফিককে দিয়েছে বুক ফোলানো আত্মবিশ্বাস। ম্যাচ শেষে তামিমের মাঠে নামা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বিস্তর। দেশি সংবাদ মাধ্যম থেকে শুরু করে বিদেশি সংবাদ মাধ্যমেও একই আলোচনা। কোন পরিকল্পনাতে ভাঙা হাড় নিয়ে মাঠে নেমেছেন তামিম?

সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্নে বাংলাদেশ অধিনায়ক বল ঠেলে দেন তামিমের কোর্টেই। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘এটা ওই (তামিম) বলুক। ওই ভালো বলতে পারবে। কারণ সিদ্ধান্তটা দিন শেষে ওই নিয়েছে।’

মাশরাফির কাছ থেকে তামিমের নামার কারণ জানা হয়নি সাংবাদিকদের। সংবাদ সম্মেলন পর্ব শেষ করে গেটের কাছে আসতেই টিম হোটেলের গাড়ি। তখন গাড়িতে উঠার অপেক্ষায় টিম বাংলাদেশ। তামিম সাংবাদিকদের দেখে এগিয়ে আসলেন। তিনি নিজেই জানালেন কী কারণে কব্জির ভাঙা হার নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন।

মাশরাফি আউট হয়ে ফিরে যাওয়ার পর তামিমকে নিয়ে পরিকল্পনা করা হয় সাজঘরে। মাশরাফিই ছিলেন এর মূলভূমিকায়। তখন আলোচনা হয় মুশফিক শেষ পর্যন্ত ক্রিজে থাকলেই কেবল তামিম ক্রিজে নামবেন। শর্ত হচ্ছে মুশফিককে স্ট্রাইকে থাকতে হবে। কিন্তু ওভারের পঞ্চম বলে মুস্তাফিজ আউট হলে মাশরাফির পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে বসে। তবে পরিকল্পনা নষ্ট হতে দেননি তামিম। নিজের সিদ্ধান্তেই মাঠে নেমে পড়েন আহত হয়েও!

তামিম মাঠে নামার বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান, ‘মুস্তাফিজ আউট হওয়ার পর ফিজিও মাঠে নামার ব্যাপারে আমাকে সবুজ সঙ্কেত দেননি। কেননা মুশফিক তখন ননস্ট্রাইকিং প্রান্তে। কোচও বলেছেন এটা তোমার সিদ্ধান্ত। মাশরাফি ভাইও মানা করেছেন। তবে আমি নেমেছি। আমার মধ্যে আত্মবিশ্বাস ছিল। মাশরাফি ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেই আত্মবিশ্বাস বেড়েছে।’

সব বাধা পেরিয়ে তামিম মাঠে নেমে কোটি ক্রিকেট ভক্তের হৃদয় জয় করেছেন। তার এই ত্যাগে বড় কোন বিপদও ঘটতে পারতো। নিজের ক্যারিয়ার পড়তে পারতো হুমকিতে। যদিও তার আগেই এশিয়া কাপ থেকে ছিটকে গেছেন। কমপক্ষে ৬ সপ্তাহ মাঠের বাইরে চলে যেতে হবে তামিমকে।

সাহস২৪.কম/খান/আল মনসুর 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত