খড়কুটোর তৈরি স্টেডিয়াম

প্রকাশ : ১২ মার্চ ২০১৮, ১৮:৩৪

সাহস ডেস্ক

২০১৮ রাশিয়া ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবলের আসর শুরু হতে যাচ্ছে জুন মাসে। বিশ্বের সবচেয়ে জমজমাট এ আসরকে কেন্দ্র করে বিশ্ব  দরবারে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরতে ঐতিহ্যের সঙ্গে অভিনব সব জিনিস উপস্থাপনের চেষ্টায় ব্যস্ত রয়েছেন রাশিয়ানরা। পাশাপাশি হচ্ছে  নানা প্রতিবাদও। 

বিশ্বকাপ আয়োজনে বিপুল পরিমাণ ব্যয়ের প্রতিবাদে অভিনব এক পন্থা বেছে নিয়েছেন রাশিয়ার এক কৃষক। প্রতিবাদের অভিনব পন্থা  হিসেবে ইট-বালি-সিমেন্ট ছাড়াই তিনি বানিয়েন একটি স্টেডিয়াম। এই স্টেডিয়ামটি নির্মিত করেছেন খড়কুটো দিয়ে।

রাশিয়ার ওই কৃষকের নাম রোমান পুনোমারোভ। সেন্ট পিটার্সবুর্গ স্টেডিয়ামের রেপ্লিকা খড় দিয়ে বানিয়েছেন তিনি। বিশ্বকাপের পর্দা  ওঠার আগেই খড়ের তৈরি ফুটবল স্টেডিয়ামের রেপ্লিকা বানিয়ে সবার নজর কেড়েছেন পুনোমারোভ।

বিশ্বকাপের জন্য উপযোগী করে তুলতে এই ভেন্যুর জন্য ৭২ কোটি ডলার খরচ করেছে রাশিয়া। আগামী বছরের বিশ্বকাপে এই ভেন্যুটিতে  সেমিফাইনালসহ মোট সাতটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। অনেকেই মনে করছেন, এই স্টেডিয়ামের জন্য এত বিপুল পরিমাণ অর্থের খরচ করাটা  একেবারেই অন্যায্য। বিশাল এ খরচকে সবার সামনে তুলে ধরতেই পুনোমারোভের এমন প্রচেষ্টা।

বালু ও খড়কুটো দিয়ে এই স্টেডিয়াম তৈরি করা হয়েছে। স্টেডিয়ামের মাঠ থেকে শুরু করে দর্শকদের আসনও খড়ের তৈরি। এখানে  দর্শকদের খেলা উপভোগ করার জন্য রয়েছে ৩০০টি আসনের ব্যবস্থা। ইতিমধ্যে স্থানীয় কয়েকটি দল খড়ের তৈরি স্টেডিয়ামে একটি  টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছে। স্টেডিয়ামটি বানানো হয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার খড়ের আঁটি দিয়ে। পাঁচ-ছয়টি ধাপে বিন্যস্ত করা হয়েছে দর্শক  গ্যালারি।

নিজে একটা আস্ত স্টেডিয়াম বানিয়ে ফেলেছেন বলেই হয়তো সেন্ট পিটার্সবুর্গের স্টেডিয়াম নির্মাণে দফায় দফায় সময়সীমা ও ব্যয়  বাড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছেন না পুনোমারোভ। হোক না সেটা খড়ের তৈরি! পুনোমারোভ বলেন, ‘এটা খুবই অবাক করার  মতো ব্যাপার, কিভাবে একটা স্টেডিয়ামের খরচ ও সময়সীমা এভাবে বেড়ে যেতে পারে!’

স্টেডিয়ামের রেপ্লিকা তৈরি করা নিয়ে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপের আগে মানুষের উত্তেজনা এবং খেলাধুলার পরিবেশ  বিরাজ করতে দেখাটা আমার কাছে দারুণ।’ পুনোমারোভের তৈরি রেপ্লিকা বিশ্বকাপ ভেন্যু নির্মাণে খরচ, দুর্নীতি, বিলম্ব এবং শ্রমিকদের  মৃত্যুকে তুলে ধরবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

পুনোমারোভের এই কীর্তির ব্যাপারে শুনেছেন পিটার্সবুর্গে স্টেডিয়াম নির্মাণের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারাও। নিজেদের সমালোচনা শুনেও অবশ্য  ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখাননি তারা। বরং প্রশংসাই করেছেন এই কৃষকের রসবোধের। পুনোমারোভকে পিটার্সবুর্গের গ্যালারিতে বসে খেলা দেখার  আমন্ত্রণও জানানো হবে।

সাহস২৪.কম/খান/আল মনসুর 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত