পুলিশের কাজ পুলিশ করেছে, বেশ করেছে

প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০১৬, ১৩:০৯

(১) 
এইটা হচ্ছে বন্দুকযুদ্ধ। যেখানে ইসলামী জঙ্গিরা গ্রেফতার এড়াতে চাইবে বা আমাদের পুলিশের উপরে আক্রমণ করবে সেখানে তো আমাদের পুলিশ ওদেরকে গুলিই করবে। 'আয় খোকা আয়' বলে তো গান করবে না আরকি। এইরকম ক্ষেত্রে পুলিশের গুলিতে নয়জন মরলো নাকি নব্বইজন মরলো তাতে কিছু যায় আসেনা। পুলিশের কাজ পুলিশ করেছে, বেশ করেছে। ভেরি ওয়েল ডান। (কিন্তু যে দুই একজন জ্যান্ত গ্রেপ্তার হয়েছে ওদেরকে নিয়ে আবার বানানো বন্দুকযুদ্ধে মারবেন না প্লিজ। বানানো ক্রসফায়ারে মানুষ মারা অন্যায়। খুবই অন্যায়। সেটা সিরাজ শিকদারই হোক, ছ্যাঁচড়া গুণ্ডাই হোক বা মুসলিম জঙ্গিই হোক- গ্রেপ্তার করে নিয়ে তারপর মেরে ফেলা, সেটা নেহায়েতই একটা হত্যাকাণ্ড।)

যেগুলিকে ধরতে পারবেন, ওদের বিচার করেন। আমরা দেখতে চাই আদালতে ওদের বিরুদ্ধে বিচার হচ্ছে, ওদের কুকর্মের কথা আদালতে প্রমাণিত হচ্ছে। অপরাধ প্রমাণিত হলে সকলেই সেটা জানতে পারে। ওদের বিরুদ্ধে তখন যে সাজাটা হবে সেটা হবে গোটা সমাজ ও রাষ্ট্র কর্তৃক প্রদত্ত শাস্তি। অপরাধীকে শাস্তি দেওয়ার অধিকার রাষ্ট্রের আছে। কিন্তু দুই চারজন লোক গোপনে সিদ্ধান নিয়ে একজন মানুষকে সাজা দিতে পারেন না। এই অধিকার পুলিশকে কেউ দেয়নি। হত্যা তো নয়ই। এমনকি আমাদের প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি বা প্রধান বিচারপতি বা স্পিকার কেউই একজন মানুষকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত দিতে পারেন না। যদি দেন, তাইলে সেটা হবে হত্যাকাণ্ড।

(২) 
আমি বিশ্বাস করি যে আমাদের পুলিশের সেই সক্ষমতা আছে, দক্ষতা আছে যে ওরা যে কোন মাপের সন্ত্রাসী বা জেহাদি কর্মকাণ্ড মোকাবেলা করতে পারে। মোকাবেলা করতে পারে দুইভাবেই- ওদেরকে ধরে বিচারে সোপর্দ করে অপরাধ প্রমাণ করা, আর জঙ্গিরা যদি হামলা করতে চায় তাইলে সেই হামলাকে পায়ের নিচে পিষ্ট করা। আমি বিশেষজ্ঞ না, কিন্তু কিঞ্চিৎ বুদ্ধিশুদ্ধি যা আছে, অভিজ্ঞতা যা আছে, খবরাখবর যতটুকু পাই, তাতে বলতে পারি যে আমাদের পুলিশের সক্ষমতা দুনিয়ার কোন পুলিশের চেয়ে কম না।

(৩) 
আমি যখন কাউকে এই কথাটা বলি, যে আমাদের পুলিশের সেই দক্ষতা ও সক্ষমতা আছে, অনেককেই দেখি যে হাসেন। আমার কথা বিশ্বাস করতে চান না। ওরা আমাদের আইজি বা এইরকম বড় বড় কিছু সিনিয়ার অফিসারের দিকে আঙ্গুল তুলে দেখায়। এবং ওদেরকে আমি দোষও দিতে পারি না। কিন্তু এইসব পঞ্চাশোর্ধ সিনিয়র অফিসারদের প্রতি কোনরকম অশ্রদ্ধা না দেখিয়েই বলি- এইসব বুইড়া অফিসারদের দিকে তাকিয়ে আপনি আমাদের পুলিশের দক্ষতা বুঝতে পারবেন না। গত দশ পনের বছরে আমাদের পুলিশের মধ্যম ও নীচের দিকে একটা বড় পরিবর্তন হয়েছে। পরিবর্তনটা এখনো সাধারণ্যে দৃশ্যমান না, কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই দেখতে পাবেন।

পুলিশের তো দুই ধরনের অফিসাররা আছে। একদল হচ্ছে সাব-ইন্সপেক্টর আর ইন্সপেক্টর ওরা। আরেকদল হচ্ছে বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে যোগ দেন (এদের শুরুর পদটা কি? সহকারী কমিশনার?)। এই দুই জাতের অফিসারদের মধ্যেই আমি দেখেছি, আগের মত অর্ধশিক্ষিত পেট মোটা মাথা মোটা লোকজন এখন একরকম নাই বললেই চলে। এখন উচ্চশিক্ষিত পড়ালেখা করা কালচারালি একটু উঁচু মানের অনেক ছেলে মেয়েই পুলিশের চাকরী নিয়েছে। এদেরকে একটু উপরের দিকে উঠতে দেন, দেখবেন।
আর অস্ত্রশস্ত্র, টেকনোলজি ট্রেইনিং এইসব দিক দিয়েও পুলিশ যথেষ্ট অগ্রসর হয়েছে। চেতনার দিক দিয়েও। জিয়াউর রহমান ঐ যে পাকিস্তান ফেরত রাজাকার টাইপ মিলিটারি অফিসারগুলিকে পুলিশে পাঠিয়ে পুলিশের চেতনার বারোটা বাজিয়েছিল, সেটাও নাকি অনেকটা পরিষ্কার হয়েছে।

(৪) 
সবই তো আশাব্যঞ্জক মনে হয়- এখন শুধু সরকারগুলির রাজনৈতিক ইয়েটা ঠিক থাকলেই হয়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত