‘মাদকে ভাসছে সমাজ, আক্রান্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরাও’

আজ এক অভিশাপ ভর করেছে আমার প্রিয় জন্মস্থানে৷ আজ আমাদের জামালপুর সদর পূর্বাঞ্চলের বাতাস ক্রমে ক্রমে বিষাক্ত হয়ে পড়ছে মাদকের ভয়াল থাবা।  গ্রাস করছে আমার প্রিয় এলাকা।

এখানে চিহ্নিত কিছু স্থানে প্রকাশে বিক্রি ও সেবন হচ্ছে মাদকদ্রব্য৷ যারা মাদকদ্রব্য বিক্রি করছে তারা যেমন যেমন বুক ফুলিয়ে ঘুড়ে বেড়াচ্ছে আর যারা মাদক দ্রব্য কিনছে ও সেবন করছে তারাও। 

ধীরে ধীরে এসকল মাদক চক্রের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছে সাধারণ জনতা৷ সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে, স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া বেশিসংখ্যক ছাত্র-ছাত্রীরাই নিজেদেরকে মাদক দুনিয়ায় যুক্ত করে ফেলছে৷ বিশেষ করে জামালপুর পূবাঞ্চল এলাকা নান্দিনা, গোপালপুর বাজার, তুলসীপুর, শ্রীপুরে মাদক দ্রব্য হয়ে উঠেছে অত্যন্ত সহজলভ্য৷ চাইলেই আপনি পাচ্ছেন সকল ধরনের মাদকদ্রব্য৷ 

আজ এই মাদক চক্রগুলো অত্যন্ত শক্তিশালী হয়ে উঠছে৷ এখনি যদি চক্রগুলোর দৌরাত্ব বন্ধ করা না যায় তাহলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম থুবড়ে পড়বে আস্তাকুঁড়ে৷

মাদক চক্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার সময় এখনি৷ এদেরকে প্রশ্রয় দিচ্ছি আমার, আপনার মতো লোকজনেরাই৷ কারো একার পক্ষে এটার সমাধান করা অসম্ভব৷ সমাজের সর্বস্তরের মানুষজনদের সাথে নিয়ে প্রশাসনকে এর সমাধান করতে হবে৷ তা না হলে মাদকের নিরাপদ অভয়ারণ্য হয়ে উঠবে আমাদের সমাজ।

প্রত্যেকটি স্কুল-কলেজের শিক্ষকগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, পাশাপাশি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি প্রত্যেক বাবা-মার প্রতি, আপনারা আপনাদের সন্তানের প্রতি সোচ্চার হোন৷ আপনারা আপনাদের সন্তানের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধি করেন৷ অনেক সময় দেখা যায়, অবাধ্য সন্তানের ভয়ে বাবা-মা কিছু বলেন না।  এরফলে বিপদ আরো বেশী হয়৷ অবাধ্য সন্তানকে বাধ্য করার চেষ্টা করুণ তা না হলে আপনার এই অবাধ্য সন্তানকে প্রশাসনের কাছে তুলে দেন৷

গোপালপুর বাজারের রাতের চিত্র আরো ভয়াবহ৷ যেখানে অবাধে বিক্রি হচ্ছে মাদক দ্রব্য৷ আর মাদক সেবন করার নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে স্কুল কলেজ সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলো৷ প্রশাসনের নীরব ভূমিকা আরো বিপদগামী করে তুলেছে মাদকসেবীদের। অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ রইলো, আপনার সন্তান কি করছে রাতের আঁধারে তা খোঁজ নেন দয়া করে৷ স্কুলকলেজ প্রশাসনদের গা ছাড়া ভাব দায়িত্বহীনতার পরিচয় দেয়৷ আপনি ইচ্ছা ও অনিচ্ছাকৃতভাবে এসব না দেখার ভান করে পার করে দিবেন প্রতিদিন৷ তার বিনিময়ে ধ্বংস হচ্ছে আমাদের প্রজন্ম৷ তার দায়ভার আপনাদের উপরই বর্তায়৷ 

আর নয় প্রতিবাদ, এবার হোক প্রতিরোধ৷ যে সকল স্পটে মাদকের অভয়ারণ্য সেগুলোর আশ্রয়দাতা দের খুঁজে বের করুণ৷ সমাজের যে সকল মানুষ এ চক্রের সাথে জড়িত তাদের কথা সকলেরই জানা৷ কিছু নীতি-আদর্শবিহীন, স্বার্থান্বেষী নেতারা আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে এদের নিজেদের দাপট টিকিয়ে রাখার জন্যে৷

তাই প্রশাসনের কাছে অনুরোধ রইলো এখনি সময় আমাদের সমাজকে বদলে দেওয়ার৷ এখনি সময় প্রশাসনের সমাজের গুণীজনদের সাথে নিয়ে টীম গঠন করে আদর্শবান মানুষদেরকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলা৷

আর লক্ষ্য রাখতে হবে যারা মাদক নিয়ে ব্যবসা করছে তারাই যেন মাদক নির্মূলের মিছিলে সামনে থেকে নেতৃত্ব না দেয়৷ মাদক ব্যবসায়ীদের আশ্রয়দাতাদের নির্মূল করেই শুরু হোক মাদক ও মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন৷

সাহস২৪.কম/আল মনসুর