মসলার জন্য যুদ্ধ!

প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০১৬, ১৬:২৫

সাহস ডেস্ক

রান্না সুস্বাদু করতে মসলার কোন জুড়ি নেই। আর ভোগ্যপণ্যের মধ্যে এই মসলার বৈচিত্র্য সবচেয়ে বেশি। প্রতিদিন রান্নায় ব্যবহার হচ্ছে নানা জাতের নানা দেশের মসলা। মসলা কিংবা জায়ফলের মতো উপকরণগুলো এখন সহজলভ্য হলেও প্রাচীনকালে মসলা ছিল দুর্লভ ও মূল্যবান। পৃথিবীতে মসলা নিয়ে দীর্ঘ যুদ্ধেরও নজির আছে। এর কারণ ছিল বিশ্বব্যাপী মসলার চাহিদা এবং এর দুষ্প্রাপ্যতা। 

ষোড়শ শতাব্দীর শুরুতে ইস্ট ইন্ডিজের ‘রান’ নামের একটি বিশেষ দ্বীপের দখল নিয়ে যুদ্ধে নেমে পড়ে দু’টি বিখ্যাত জাতি ব্রিটিশ ও ডাচ। কারণ দুর্লভ মসলায় ভরপুর ছিল সেই বিশেষ দ্বীপ।  জায়ফল কিংবা লবঙ্গের মতো মসলা সেই বিশেষ দ্বীপ ছাড়া আর অন্য কোথাও সহজে মিলত না। মনে করা হতো, জায়ফলে আছে প্লেগ রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা। তাই এই বিশেষ মসলার দিকে নজর পড়ে অনেকের। ডাচরা অনেক আগে থেকেই ‘মসলা দ্বীপে’র দিকে নজর দিয়ে আসছিল। কিন্তু এর আগেই ১৬১৬ সালে ব্রিটিশ সেনানায়ক নাথানিয়েল কোর্টহোপ ‘রান’ দ্বীপ দখল করেন। খুব অল্পসংখ্যক সৈন্য নিয়ে তিনি টানা চার বছর দ্বীপটি দখল করে রাখেন। সেই সঙ্গে বাড়িয়ে তোলেন মসলার ফলনও। কিন্তু তার সেনাদলের এক গুপ্তচরের বিশ্বাসঘাতকতায় ১৬২০ সালে ডাচদের হাতে নিহত হন কোর্টহোপ। 

এক সময় দ্বীপটা ব্রিটিশদের হাত থেকে বেদখলে হয়। এরপর থেকেই ব্রিটিশরা বারবার দাবি করতে থাকে ‘রান’ দ্বীপের মালিকানার। কিন্তু ডাচরা শক্ত হাতে দ্বীপটি দখলে রাখে এবং যুদ্ধ চালিয়ে যায়। রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে প্রাণ হারায় অসংখ্য সৈন্য।  তারপর একদিন তারা শান্তির দিকে এগোতে চায়। ব্রিটিশরা দখলে নিতে সক্ষম হয় ‘রান’ দ্বীপ।   

‘রান’ দ্বীপ, বিনিময়ে ডাচদের দিতে হবে ম্যানহাটান নামের একটি প্রত্যন্ত দ্বীপ। ম্যানহাটানে তখন প্রচুর আপেল উৎপাদন হতো। যুদ্ধের বদলে শান্তি আর মসলার বিনিময়ে আপেল! ইতিহাস তো তা-ই বলে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত