ভিটামিন সেবনে সতর্কতা

প্রকাশ : ০৮ এপ্রিল ২০১৭, ১৫:৩৮

সাহস ডেস্ক

পৃথিবীর সকল মানুষের মাঝেই নানা ধরনের ভিটামিন বড়ি খাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। শারীরিক দুর্বলতা কমাতে রোগীরাও চিকিৎসকের কাছে ভিটামিন বড়ি চেয়ে থাকেন, কখনো নিজেরাই দোকান থেকে কিনে খান। কিন্তু না জেনেবুঝে দিনের পর দিন ভিটামিন বা খনিজ উপাদানসমৃদ্ধ বড়ি সেবন করা কি নিরাপদ? কিংবা সত্যিই এটা প্রয়োজনীয়?

বৈজ্ঞানিক গবেষণা অনুযায়ী, ভিটামিন বা নানা ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ ওষুধ মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ বা স্ট্রোক, ক্যানসার ও হৃদ্‌রোগ প্রতিরোধে কার্যকর নয়। শুধু তা-ই নয়, না জেনে অনেক সময় এসব বড়ি দীর্ঘদিন খাওয়া ক্ষতিকরও হতে পারে।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা যাচাই-বাছাই করে বিভিন্ন রোগে বা ভিটামিন স্বল্পতায় ব্যবস্থাপত্রে ভিটামিন বড়ির নাম লিখে থাকেন। যেমন গর্ভকালীন ফলিক অ্যাসিড বা আয়রন দেওয়া হয়, আয়রনের অভাবজানিত রক্তস্বল্পতায় আয়রন দেওয়া হয়। পঞ্চাশোর্ধ্ব নারী এবং সত্তরোর্ধ্ব পুরুষদের অনেক সময় ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি দেওয়া হয়। রক্তে ভিটামিন ডির পরিমাণ কমে গেলেও (যেমন দীর্ঘমেয়াদি কিডনি অকার্যকারিতায়) ভিটামিন ডি বড়ি খাওয়া যায়। কিন্তু বিনা প্রয়োজনে শুধু শুধু ভিটামিন বড়ি কিনে খাওয়া কেবল অর্থের অপচয় নয়, এতে শারীরিক ক্ষতিও হতে পারে।

অতিরিক্ত ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম মানুষের কিডনি বা পিত্তথলিতে পাথর গঠনের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। ক্যালসিয়াম বেড়ে গেলে হদ্‌স্পন্দনে সমস্যা হতে পারে। ভিটামিন এ এবং ভিটামিন ই অতিরিক্ত হলে ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। ভিটামিন বি এবং সি শরীরে জমা করার কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই এগুলো বাড়তি খেয়ে কোনো লাভ নেই।

আমাদের শরীরে প্রতিদিন যে পরিমাণ ভিটামিন ও খনিজ উপাদানের প্রয়োজন হয়, তা দৈনন্দিন একটি সুষম খাদ্যতালিকা অনুসরণের মাধ্যমেই পূরণ করা যায়। শাকসবজি, ফলমূল, দুধ, দই, মাছ, মাংস, বাদাম প্রভৃতি খাবার নানা ধরনের ভিটামিন ও খনিজের ভালো উৎস। ভিটামিনের অভাবজনিত রোগে চিকিৎসকের পরামর্শে ভিটামিন বড়ি খেতে পারেন।

ডা. শারমিন আহমেদ

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত