সাপাহারে হারিয়ে যাচ্ছে দেশি মাছ ও বিদেশী পাখি

প্রকাশ : ১৩ জানুয়ারি ২০১৮, ২০:৩৪

নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁর সাপাহারে নদী নালা, খাল বিলে দেশি প্রজাতির মাছ ও অতিথি পাখির দেখা মিলছে না। প্রাকৃতিক হরেকরকম মাছ ও পাখপাখালির কলকাকলীতে ভরা সাপাহার উপজেলার ঐতিহ্যবাহী জবই বিল ও পূর্নভবা নদীটি এখন হারিয়েছে তার ঐতিহ্য।

দিনে দিনে কমছে নদী নালা, খাল বিল। পুকুর, জলাশয়ের বেশির ভাগই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মাছ চাষ হয়। ফলে দেশি প্রজাতির মাছ শূন্য হয়ে পড়েছে। এ অঞ্চল দেখা মিলছে না পাবদা, টেংরা, কৈ, টাকি, পুটি, খৈলশা শিং, বেলে, মাগুর, রুই, কাতলা, বাইম, চান্দা, চিতল, শলা চিংড়ি, হরিনা চিংড়ি, বোয়ালসহ নানা প্রজাতির দেশীয় মাছের।

জানা গেছে, ৮০ দশকে সারা বছরই বিল ও নদীটি পানিতে পরিপূর্ণ থাকতো। বহুপ্রজাতির দেশীয় মাছ এবং নানা ধরনের কচুরিপানায় ভরে থাকত। আসতো হরেক রকমের অতিথি পাখি।

এসময় প্রতিবছর খরা মৌসুমে বিলের পানি একটু কমলে বহু দূরদুরান্ত থেকে রবিবার ও মঙ্গলবার হাজার হাজার মানুষ বিলে মাছ ধরতে আসত। বিলে মাছ ধরতে আসা মানুষদের মধ্যে প্রতিবছরই ১ জন বড় মাছের আঘাতে মারা যেত। সেসময়ে কুসংস্কার হিসেবে মানুষ এই বিলকে মানুষ খেকো বিলও বলত।

শীতের সময় শঙ্খচিল, পানকৌড়, বক, মাছরাঙ্গা, ধলেশ্বরী, বালিহাঁস, অসংখ্য অতিথি পাখি এই বিল ও নদীতে আসত।

বিলটিকে বাণিজ্যিকভাবে ১৯৮৬/৮৭ সালে তৎকালীন এরশাদ সরকার নীতিমালার আওতায় এনে খাজনার মাধ্যমে মৎস্যজীবীদের মাঝে লিজ প্রদান করে। তখনকার দিনে মৎস্যজীবীদের তালিকা অনুযায়ী ওই এলাকায় প্রকৃত মৎস্যজীবী সংখ্যা ছিল ৩১৭ জন। 

বর্তমানে এলাকায় জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও কচুরী পানা মুক্ত হওয়ায় সারাবছর বিলে বিভিন্ন কাজে মানুষ নেমে থাকায় অতিথি পাখী চোখে পড়ে না।

ঈদে এখানকার মানুষ বিলে তাদের পরিবার পরিজনদের নিয়ে বাংলার ঐতিহ্য নৌকা বাইচ উপভোগ করেন। ইতোমধ্যে সাপাহার উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের উদ্যোগে ৫০০ মিটার এপ্রোচ সড়কের উভয় পাশে অতিথিদের বসার জন্য ইট সিমেন্ট বালি দিয়ে বেশ কিছু চেয়ার নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে।

সাহস২৪.কম/রিয়াজ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত