সুন্দরবনের বন্যপ্রাণি প্রজননকেন্দ্রের ৪৩ কুমির চুরি

প্রকাশ : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১০:১৪

সাহস ডেস্ক

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের করমজলে সরকারিভাবে বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে একমাত্র বন্যপ্রাণি প্রজননকেন্দ্রের ৪৩টি কুমিরের বাচ্চা চুরি হয়েছে। চুরি হওয়ার পর বর্তমানে করমজল কুমির প্রজনন কেন্দ্রে রোমিও নামে ১টি পুরুষ, জুলিয়েট ও পিলপিল নামের ২টি মা কুমির ও ২৩৪টি বাচ্চা কুমির রয়েছে।

এঘটনায় ওই কেন্দ্রের বনকর্মী (লস্কার) মাহাবুব হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া জাকির হোসেন নামে এক কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এবং বিষয়টি তদন্তের দায়িত্বভার দেওয়া হয়েছে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাদঁপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মেহেদীজ্জামানকে।

সুন্দরবনের বিলুপ্তপ্র্রায় লবণাক্ত পানির প্রজাতির কুমিরের প্রজনন বৃদ্ধি ও সংরক্ষণের জন্য ২০০২ সালে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজলে প্রায় ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা হয় দেশের একমাত্র এই বন্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্রটি। 

সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মেহেদীজ্জামান জানান, করমজল বন্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্রের দুইটি প্যান (কৃত্রিম পুকুর) থেকে ৪৩টি কুমিরের বাচ্চা চুরি হয়ে গেছে। 

গঠিত তদন্ত কর্মকর্তা চাঁদপাই রেঞ্জের এসিএফ মো. মেহেদীজ্জামান আরও বলেন, কোন হিংস্র প্রাণি যদি প্যানে ঢুকে বাচ্চাগুলোকে আক্রমণ করতো কিংবা খেয়ে ফেলতে তাহলে সেখানে হাড়, মাংস, অন্যান্য অঙ্গ-প্রতঙ্গ ও রক্ত দেখা যেত। তবে এমন কোন আলামত সেখানে পাওয়া যায়নি। প্রায় এক বছর বয়সী এই কুমিরের বাচ্চাগুলো চুরি কিংবা পাচার করে দেওয়া হয়েছে। চীন, মিয়ানমার, লাওস ও থাইল্যান্ড সীমান্তের গোল্ডেন ট্রাংগল নামের আন্তর্জাতিক চোরা বাজারে কুমিরের বাচ্চার চড়া মূল্য থাকায় একটি সংঘবদ্ধ চক্র এই চুরি ও পাচার কাজের সাথে জড়িত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, ১ ফেব্রুয়ারি সকালে কুমিরের বাচ্চাগুলো চুরি যাওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে আমি ওই দিনই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিকভাবে এ ঘটনায় জড়িত বন্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্রের বনকর্মী (লস্কার) মাহাবুব হোসেনকে সাময়িক বরখান্ত করা হয়েছে। এছাড়া জাকির হোসেন নামে এক কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর দোষিদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত