অভিনেতা জামশেদ শামীমের স্বপ্নযাত্রা

প্রকাশ : ১৪ মে ২০১৬, ১৬:৫৩

বিনোদন ডেস্ক

ধীরালয়ে মঞ্চ ও টেলিভিশনে নিজের জায়গা শক্ত করে নিচ্ছেন তরুণ অভিনেতা জামশেদ শামীম। সম্প্রতি বাংলাদেশ কারাগারের একটি সরকারী প্রামাণ্যচিত্র ও মুক্তদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘ফেস টু ফেস’ দিয়ে আবারও আলোচনায় এসেছেন এই অভিনেতা। আজকের সাক্ষাৎকারে সাহসের মুখোমুখি জামশেদ শামীম।
 
সাহস: কেমন আছেন? 
জামশেদ শামীম: এইতো, অস্থির সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে নিজেকে ভালো রাখার চেষ্টা করছি। 

সাহস: বর্তমান ব্যস্ততা কি নিয়ে? 
জামশেদ শামীম: অভিনয় আর অভিনয় শিল্পী হিসেবে নিজেকে প্রস্তুত করতেই ব্যস্ত বর্তমানে। একটু একটু করে নিজেকে তৈরী করছি ভালো কাজের জন্য। ভালো শিল্পী হতে হলে তো আগে একজন ভালো মানুষ হওয়া জরুরী, তাই ভালো মানুষ হওয়ার চর্চা করছি।
 
সাহস: মিডিয়ায় আপনার পথ শুরু?
জামশেদ শামীম: শুরুটা জাঁনেসর ওসমানের একটি ঈদের নাটক দিয়ে নাম “তিন পাগলের ঈদের নাটক”।

সাহস: আপনার তো অভিনয়ের হাতেখড়ি থিয়েটার থেকে, টেলিভিশনে অভিনয়ের জন্য কি মঞ্চ ব্যাকগ্রাউন্ড জরুরী বলে মনে করেন? কেন জরুরী?
জামশেদ শামীম: আসলে মঞ্চ বা থিয়েটার কাউকে মিডিয়া বা ফিল্মের অভিনয় শিখায় না, থিয়েটার অভিনয় চর্চার একটা সুস্থ পরিবেশ দেয়। এবং একজন শিল্পীকে বিনয়ী মানুষ হতে শিখায়। অভিনয়টা আসলে ধ্যান বা চর্চার মাধ্যমে একজন শিল্পীর ভেতর ভর করে আর সেই ধ্যানের উপযুক্ত পরিবেশ থিয়েটার।

সাহস: আমাদের নাটক বা সিনেমায় কি কাঙ্খিত পরিবর্তন আসছে? 
জামশেদ শামীম: পরিবর্তনের নামে সম্ভবত আমরা দিনদিন প্রভাবিত হচ্ছি এতে আমাদের নিজস্বতা হারাচ্ছে। এই ব্যাপারে এর বেশি কিছু বলতে চাইছিনা আপাতত।

সাহস: বর্তমান মিডিয়ার সুস্থ পরিবেশ তৈরিতে কোন কোন বিষয়গুলোকে প্রতিবন্ধকতা মনে করেন?
জামশেদ শামীম: আমাদের মিডিয়ার পরিবেশটা একদম সুস্থ আছে। তবে কিছু অসুস্হ বিকৃত মানসিকতার অমানুষ ঢুকে পড়েছে। এমনটা আগেও হয়েছিল তবে তারা টিকে থাকতে পারেনি আর এখন যারা আছে তারাও টিকতে পারবেনা আশা করি।

সাহস: সুস্থ ধারার টেলিভিশন বা চলচ্চিত্র মাধ্যম নির্মাণ করতে কি কি পদক্ষেপ নেওয়া জরুরী বলে মনে করেন? 
জামশেদ শামীম: কাতুকুতু দিয়ে দর্শক হাসানোর ফালতু চেষ্টা বন্ধ করতে হবে। নাটক সিনেমায় জীবনের গল্পটা দেখতে চায় দর্শক। যেটা তার বা তার পাশের মানুষটির গল্প। চুরি করা বা নকল গল্প থেকে বের হয়ে মৌলিক গল্প নিয়ে বেশি বেশি কাজ হওয়াটা জরুরী।

সাহস: বর্তমান সময়ের নবীন শিল্পীদের মধ্য থেকে আফজাল হোসেন, হুমায়ুন ফরিদী, সুবর্ণা মুস্তফা বা মৌ, নোবেল বেরিয়ে আসছেনা কেন? সীমাবদ্ধতা কোথায়? 
জামশেদ শামীম: কাজের প্রতি ভালবাসা শ্রদ্ধা প্রতিশ্রুতি এবং চর্চা এর প্রধান কারণ। তাছাড়া প্রচার মাধ্যম এখন অনেক যা আগে ছিল খুব সীমিত।
 
সাহস: নবীন ডিরেক্টরদের কাজের মান নিয়ে আপনার মন্তব্য কি? 
জামশেদ শামীম: নবীন নির্মাতারা অনেক অনেক ভালো মানের কাজ করছেন। নির্মাণ কৌশলের পাশাপাশি গল্পের দিকে একটু মন দিলে হয়তো আরো অনেক ভালো কাজ দেখতে পাবেন দর্শক।

সাহস: আমাদের সিনেমার বেশিরভাগ গল্প ভীনদেশি গল্প বা সিনেমা থেকে চুরি করা, এই মেধাচুরি নিয়ে আপনার ভাবনা কি? 
জামশেদ শামীম: বর্তমান সময়ে গোটা বিশ্ব আমাদের চোখের সামনে, এখানে দর্শকদের ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করাটা বোকামি। আর চুরি বা নকল করাটা হাস্যকর। আমি মূল সিনেমাটি পেলে সময় ও টাকা খরচ করে কেন সস্তা মানের নকল সিনেমা দেখব!

সাহস: কেবল টাকা হলেই কি এই মাধ্যমে প্রযোজনায় আসা উচিত? নাকি টাকার সাথে আরো কিছু বোধ বা যোগ্যতা থাকা উচিত?
জামশেদ শামীম: টাকা হলেই প্রযোজক হওয়া এখানেই সম্ভব, কারণ এই সুযোগটা কিছু অযোগ্য নির্মাতারাই তৈরী করে দেন! টাকার জন্য অসৎ কিছু মানুষকে নোংরা সুবিধা দিয়ে প্রযোজক করে নেন তারা। যাদের শিল্প মন নেই তাদের যত টাকাই থাকুক তারা কোন ভাবেই প্রযোজক হওয়ার যোগ্যতা রাখেনা।

সাহস: কোন ধরণের চরিত্রে অভিনয়ে সাচ্ছন্দ্যবোধ করেন?
জামশেদ শামীম: যে কোন চরিত্রেই নিজেকে মানিয়ে নিতে চাই তাই সব ধরনের চরিত্রই আমাকে আনন্দ দেয়।

সাহস: অভিনেতা জামশেদ শামীমকে নিয়ে আপনার স্বপ্ন কি? 
জামশেদ শামীম: মৃত্যুর পরেও আমি আমার অভিনীত চরিত্র গুলোর মাঝে অর্থাৎ আমার কাজের মাঝে বেঁচে থাকতে চাই। তাই আমি অল্প কাজ করলেও ভালো মানের কাজ করতে চাই।

সাহস: বাংলা চলচ্চিত্র নিয়ে আপনার স্বপ্ন কি? 
জামশেদ শামীম: অনেক অনেক ভালো মানের সিনেমা হবে। চুরি করা গল্প থাকবেনা, থাকবে জীবনের মৌলিক গল্প। সারা বিশ্বে আমরা দেশটাকে উপস্থাপন করবো আমাদের সিনেমা দিয়ে। আবার দর্শকে টইটুম্বুর হয়ে উঠবে আমাদের প্রেক্ষাগৃহ।

সাহস: সাহসের পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ।
জামশেদ শামীম: সাহস পত্রিকা ও সাহস পত্রিকার সকল পাঠককে ধন্যবাদ।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত