৪ কোটি শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষিত হলেই দেশ সম্পদে ভরপুর হবে: ড. জাফর ইকবাল

প্রকাশ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৬:৪৬

সাহস ডেস্ক

জনপ্রিয় লেখক শিক্ষাবিদ ড. জাফর ইকবাল বলেছেন,‘পৃথিবীর সকল জ্ঞানী-গুণীরা বসে ঠিক করেছেন-এখন সবচেয়ে বড় সম্পদ জ্ঞান, সুতরাং যত বেশি লেখা পড়া করবে, তত সম্পদ বাড়বে। বাংলাদেশের সম্পদ বাড়াতে ছেলে-মেয়েদের সমানতালে পড়াশুনা করতে হবে।’ তিনি বলেন,‘৪ কোটি শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষিত হলেই দেশ সম্পদে ভরপুর হবে।’

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১ টায় সুনামগঞ্জ শহরের সরকারি সতীশ চন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলায় প্রধান অতিথি’র বক্তব্য রাখার সময় এসব মন্তব্য করেন তিনি।

এর আগে ড. জাফর ইকবাল বিদ্যালয়ে পৌঁছালে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে। বিদ্যালয়ের ৩১ টি স্টলে বিজ্ঞান বিষয়ক নানা প্রজেক্ট উপস্থাপন করেন শিক্ষার্থীরা। জাফর ইকবাল প্রত্যেকটি স্টল ঘুরে দেখেন এবং শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করেন।

ড. জাফর ইকবাল শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন,‘মন দিয়ে পড়াশুনা করবে, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে, ভালো চাকুরি করবে, তারপর বিয়ে করবে।’ তিনি বলেন,‘লন্ডন আমেরিকার রেস্টুরেন্টে পড়ুয়া বা রেন্ট’এ কারের চালককে বিয়ে করা নয়, শিক্ষা-দীক্ষায় এগিয়ে যেতে হবে, শিক্ষিত বরকে বিয়ে করতে হবে।’

ড. জাফর ইকবাল বলেন,‘দেশের কিছু সমস্যা নিয়ে কেউ কেউ হতাশা ব্যক্ত করেন। আমি কখনোই হতাশ হই না। আমি মনে করি, আমাদের ৪ কোটি শিক্ষার্থী-ই এখন বড় সম্পদ। অস্ট্রেলিয়ার মোট জনসংখ্যার দ্বিগুন সংখ্যক ছেলে- মেয়ে পড়াশুনা করছে।’ তিনি বলেন, ‘ডেনমার্ক গিয়েছিলাম, ওখানকার লোকসংখ্যা জেনেছি ৪৫ লাখ, আমি বলেছি এই জনসংখ্যাকে আমাদের মিরপুরেই ফিক্সড করা যাবে। দেশকে এগিয়ে নিতে সকলের আন্তরিকতা এবং জ্ঞান আহরণ করা জরুরি।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও প্রযুক্তি) মো. শফিউল আলম । স্বাগত বক্তব্য দেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাফিজ মো. মাশহুদ চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক শওকত আলী আহমদ।

ড. জাফর ইকবাল বলেন,‘বাংলাদেশে শিক্ষা-দীক্ষায় ছেলে ও মেয়েরা সমানে সমান, কোন কোন ক্ষেত্রে ছেলেদের চাইতে মেয়েরা ভাল করছে।’

ড. জাফর ইকবাল বলেন,‘আমার বাড়ি নেত্রকোনায়। আমি শিক্ষাজীবনে কখনোই বড় কোন পুরস্কার পাইনি। তখন ‘আলোকে বলেছি আলু, পোকাকে বলেছি পুক’। বড় হয়ে আমি পুরস্কার দিচ্ছি। হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে পুরস্কার প্রদান করছি। আমি যখন পুরস্কার হাতে তুলে দেই, তখন পুরস্কার গ্রহণকারী বাবা-মা’র দিকে তাকাই, তারা আনন্দের সঙ্গে ছবি তুলছেন। ছবি তোলা শেষ হলেই শিক্ষার্থী’র হাতে পুরস্কার তুলে দেই। সন্তানের সাফল্যে বাবা-মা’র আত্মতৃপ্তি বুঝি আমি, এটি তোমাদেরও বুঝতে হবে।’

তিনি বলেন,‘এখানে এসে আমি আনন্দ পেয়েছি। আমার ভাল লেগেছে, শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দেখে আমি উৎসাহিত হয়েছি।’ যারা আমন্ত্রণ দিয়ে এনেছেন তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।

ড. জাফর ইকবাল পৃথিবী বিখ্যাত বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের মৃত্যু পরবর্তী সময়ে তাঁর ব্রেইন নিয়ে গবেষণার বিষয়টি এবং মুক্তিযুদ্ধে তাঁর (জাফর ইকবালের) বন্ধুদের অংশ গ্রহণের কথা গল্পাকারে শুনান শিক্ষার্থীদের।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত