ফারমার্স ব্যাংকের ১৭ জনের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

ফারমার্স ব্যাংকে জালিয়াতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাত ঘটনায় ব্যাংক কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের দেশ ত্যাগের উপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে পুলিশের কাছে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

২০১৩ সালের ৩ জুন চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংক হিসেবে ফারমার্স ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হয়। মঙ্গলবার দুদকের উপ-পরিচালক শামসুল আলম স্বাক্ষরিত চিঠিটি পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক বরাবর পাঠানো হয়। তিনি আরও জানান, মাহবুবুল হক চিশতী পাসপোর্ট করেছেন মোঃ বাবুল চিশতী নামে। তার এই নামের ঠিকানা পুলিশের কাছে পাঠানো হয়েছে।

বাবুল চিশতি-রোজি চিশতি দম্পতি ছাড়াও নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা অন্যান্যরা হলেন- এ দম্পতির ছেলে রাশেদুল হক চিশতি, মাজেদুল হক চিশতি, তাদের মেয়ে রিমি চিশতি, পুত্রবধূ ফারহানা আহমেদ চিশতি। এ ছাড়া এ তালিকায় আরও আছেন- ব্যাংকের এসইভিপি গাজী সালাহ্উদ্দিন, ইভিপি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম মজুমদার, এসভিপি জিয়া উদ্দিন আহমেদ, ভিপি লুৎফুল হক, ভিপি মো. মনিরুল হক, এফভিপি মো. তাফাজ্জল হোসেন, এভিপি মোহাম্মদ শামসুল হাসান ভূঁইয়া, এইও মাহবুব আহমেদ ও ইও মোহাম্মদ জাকির হোসেন।

চিঠিতে বলা হয়, ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেড এর বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তা ও গ্রাহকগণ পরস্পর যোগসাজশে ব্যাংকিং নিয়মাচার লঙ্ঘন করে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাত ও উক্ত অর্থের মাধ্যমে নামে-বেনামে অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ব্যাংকের বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচারের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং এর অভিযোগ সূত্রে বর্ণিত নথি মূলে দুদকে অনুসন্ধান রয়েছে।

চিঠিতে আরো বলা হয়, বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, অত্র অভিযোগের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণ সপরিবারে দেশ ত্যাগ করে অন্যদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। সুতরাং অভিযোগ সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে ১৭ জনকে বিদেশ গমন রহিত করা একান্ত প্রয়োজন।

ব্যাংকটির পদত্যাগ করা চেয়ারম্যান মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতীর বিরুদ্ধে ঋণ জালিয়াতি, ঋণে কমিশন নেয়া, গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে নিজের অ্যাকাউন্টে অর্থ স্থানান্তর, অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। ৪০০ কোটি টাকা নিয়ে কার্যক্রমে আসা এই ব্যাংক ইতোমধ্যে ২৮৩ কোটি টাকার মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে। নানা কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে ধুঁকতে থাকা ব্যাংকটির কার্যক্রমে নেমে এসেছে স্থবিরতা।

এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংক গত ১৯ ডিসেম্বর ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) একেএম শামীমকে অপসারণ করে।