৬৫ ভারতীয় শিল্পীর সমসাময়িক ছাপচিত্র প্রদর্শনী

প্রকাশ : ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৬:০১

সাহস ডেস্ক

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭ থেকে ০৪ জানুয়ারি ২০১৮ একাডেমির জাতীয় চিত্রশালার ৬নং গ্যালালিতে শুরু হয়েছে ভারতের ৬৫ জন শিল্পীর ছাপচিত্র নিয়ে সমসাময়িক ছাপচিত্র প্রদর্শনী।

২৫ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পক্ষকালব্যাপী প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারতের ন্যাশনাল গ্যালারি অফ মডার্ণ আর্ট এর মহাপরিচালক শ্রী অদ্বৈত চরণ গড়ানায়েক ও দেশ বরেণ্য শিল্পী মনিরুল ইসলাম এবং স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা বিভাগের পরিচালক শিল্পী মনিরুজ্জামান।

প্রদর্শনী প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা এবং শুক্রবার বেলা ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

চিত্রকলায় ছাপচিত্র একটি প্রাচিনতম মাধ্যম। বিশেষত ছাপচিত্রকে সাধারণের হাতের নাগালে এনেদিতে এই মাধ্যম বেশ অগ্রণী ভূমিকা রাখে। অবিভক্ত বাংলায় ছাপাই ছবি নানাভাবে সমগ্র বাংলাকে সমৃদ্ধ করেছে। যুগের প্রয়োজনে মুদ্রণশিল্পকে সমৃদ্ধ করতে যে মাধ্যমের উদ্ভব, তা আজ হয়ে উঠেছে চিত্রশিল্পের এক অনন্য মাধ্যম। যার ফলে আমাদের বাংলাদেশে ছাপচিত্র শিল্পের উৎকর্ষ সাধিত হয়-শিল্পী শফিউদ্দিন আহমেদ, শিল্পী মোহাম্মদ কিবরিয়াসহ সমকালিন অনেক ছাপচিত্র শিল্পীর ছাপাই শিল্পকর্মের মাধ্যমে।

প্রাচীন দেশ চীনের প্রাচীনত্বকে আরও গৌরবময় করেছে তার ছাপচিত্রের ইতিহাস। কেবল প্রাচীনই নয় এই ইতিহাস, বলা ভালো চীনারাই ছাপচিত্র মাধ্যমের আবিষ্কারক। অষ্টম শতাব্দীতে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা বুদ্ধের বাণী মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্যে তা কাঠের পাটায় খোদাই করে কাগজে ছেপে প্রথম ছাপছবির আবিষ্কার ও প্রচলন ঘটিয়েছিলেন। সেটিই ছিলো ইতিহাসের প্রথম ‘ব্লক বুক’।

ছাপচিত্র দুই ধরনের। প্রথম শ্রেণিতে রয়েছে প্লেট বা উপকরণের উপরিভাগে লাগানো রঙের ব্যবহারে তৈরি ছবি, যেমন উডকাট ও লিথোগ্রাফ। এখানে শিল্পী রঙ ব্লকের উপরিভাগে দিয়ে খোদাই করা অংশের শূন্যতা সাদায় পরিস্ফুট করে ছবি বা নকশা ফুটিয়ে তোলেন। ছাপচিত্রের দ্বিতীয় শ্রেণিতে রয়েছে ইনটাগলিও পদ্ধতি, যেখানে অন্তর্গত রেখার সমাহারে ফুটিয়ে তোলা হয় ছবি। সাধারণত এসিড দিয়ে কপার বা জিঙ্ক প্লেটে এসব লেখা পরিস্ফুট করা হয়। প্রক্রিয়াটি অনেক কষ্টসাধ্য।

১৯৯০ সালে ভারতের ছাপচিত্রশিল্পী সংস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমসামিয়ক ছাপচিত্রশিল্পীরা পুনরুদ্দিপ্ত হন। চিত্রশিল্পের মাধ্যম তৈরী এবং এর মর্যাদা বাড়াতে সচেতনতা তৈরীর ক্ষেত্রে এটি সফল একটি প্রতিষ্ঠান।

আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয় যে, ভারতের ছাপচিত্রশিল্পে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রেখেছেন এরকম ৫ জন ভারতের ছাপচিত্রশিল্পী সংস্থার সদস্য এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। শিল্পীরা হলেন- আনন্দময় ব্যানার্জি, দত্তত্রয়া আপ্তে, কবিতা নায়ার, মতি যারোটিয়া এবং সুশান্ত গুহ। এই শিল্পীরা ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারতে ছাপচিত্র শিল্পের চর্চা করে আসছেন। ভারতের ন্যাশনাল গ্যালারি অব মডার্ন আট ভিডিও এবং গ্রাফিক্স শিল্পকর্মও সংরক্ষণ ও প্রদর্শন করে থাকে। স্বনামধন্য এই প্রতিষ্ঠানের শিল্পীরা এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করবেন।

উল্লেখ্য যে, ২০১১ সাল থেকে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি বিভিন্ন সময় ছাপচিত্র প্রদর্শনী ও কর্মশালার আয়োজন এবং সম্মাননা প্রদান করে আসছে।

সাহস২৪.কম/রিয়াজ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত