সের্গেই আইজেনস্টাইন

প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০১৮, ১১:৩৭

 

চলচ্চিত্রের অন্যতম শক্তিশালী ভাষা ‘মন্তাজ’ এর জন্য বিখ্যাত সের্গেই আইজেনস্টাইন শুধু সফল ও দুনিয়া কাঁপানো চলচ্চিত্র নির্মাতাই ছিলেন না তিনি তাত্ত্বিক চলচ্চিত্রবোদ্ধা ও সফল চিত্রনাট্যকারও ছিলেন। সের্গেই আইজেনস্টাইন ১৮৯৮ সালের ২৩ জানুয়ারি লাটভিয়ার রিগায় (তৎকালীন রুশ সাম্রাজ্যের অন্তর্গত লিভোনিয়া গভর্নরেট) এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু তাঁর পরিবার তাঁর শৈশবে বেশ ক'বার বসতি পরিবর্তন করেন, আইজেনস্টাইন নিজেও পরবর্তীতে এই ধারা বজায় রাখেন। তাঁর পিতা মিখাইল ওসিপোভিচ আইজেনস্টাইন জার্মান ইহুদি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ওসিপোভিচের পিতা ওসিপ আইজেনস্টাইন পরে খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করেন এবং তার মাতা ছিলেন সুইডিশ বংশোদ্ভূত। সের্গেইয়ের মাতা জুলিয়া ইভানোভ্‌না কনেৎস্কায়া রুশ গোঁড়া পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। অন্য একটি সূত্র মতে তাঁর দাদা-দাদী দুজনেই বাল্টিক জার্মান বংশোদ্ভূত ছিলেন। আইজেনস্টাইনের পিতা ছিলেন একজন স্থাপত্যশিল্পী এবং মাতা ছিলেন একজন ধনাঢ্য ব্যবসায়ীর কন্যা। জুলিয়া ১৯০৫ সালে রুশ বিপ্লবের সময় সের্গেইকে নিয়ে রিগা ছেড়ে সেন্ট পিটার্সবার্গে চলে যান। আইজেনস্টাইন মাঝে মাঝে তাঁর পিতার সাথে দেখা করতে আসত। তাঁর পিতা ১৯১০ সালে সেন্ট পিটার্সবার্গে যান। তাঁর পিতা মাতার বিচ্ছেদের পর তাঁর মাতা জুলিয়া ফ্রান্সে চলে যান। আইজেনস্টাইন গোঁড়া খ্রিস্টান হিসেবে বেড়ে ওঠেন, কিন্ত পরে তিনি নিজেকে নাস্তিক দাবী করেন।

আইজেনস্টাইন পেত্রোগ্রাদ ইনস্টিটিউট অব সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পুরকৌশল বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। ১৯১৮ সালে তিনি স্কুল ত্যাগ করে বলশেভিক বিপ্লবে যোগ দিতে রেড আর্মিতে যোগ দেন, যদিও তাঁর পিতা মিখাইল বিরোধী দলকে সমর্থন করতেন। এই বিপ্লবে জারতন্ত্রের পতন হলে তাঁর পিতা জার্মানিতে চলে যান এবং সের্গেই পেত্রোগ্রাদ থেকে ভলগ্‌দা ও দিভিনস্কে যান। ১৯২০ সালে অক্টোবর বিপ্লবের প্রচারণামূলক সাফল্যের পর সের্গেইকে মিন্‌স্কে কমান্ড পজিশনে স্থানান্তরিত করা হয়। এই সময়ে তিনি কাবুকি থিয়েটারে যোগ দেন এবং জাপানি ভাষা শিখেন। সেখানে তিনি ৩০০ কাঞ্জি বর্ণ শিখেন, যা তাঁকে তাঁর চিত্র উন্নয়নের কাজে অনুপ্রেরণা জোগিয়েছে বলে উল্লেখ করেন। এই শিক্ষার ফলে তিনি জাপানেও ভ্রমণ করেন।

থিয়েটারের সাথে যুক্ত হওয়ার এক পর্যায়ে ধীরে ধীরে থিয়েটারের ব্যক্তি থেকে ক্রমে একজন চলচ্চিত্রকর্মী হয়ে উঠেন। সমাজের উঁচুতলার শাসকদের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের লড়াইকে আইজেনস্টাইন যেভাবে তাঁর সিনেমায় তুলে ধরেছেন, তা ইতিহাসে বিরল। আধুনিক সিনেমার অগ্রদূত আইজেনস্টাইন নিজের পিতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে রুশ সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। বিপ্লবের পর আইজেনস্টাইন লাল ফৌজে যোগ দেবার পরই সিনেমা নিয়ে তাঁর আগ্রহের শুরু। সিনেমার জগতে আইজেনস্টাইনের অবদান অনেক ক্ষেত্রেই পরিমাপের ঊর্ধ্বে। সিনেমাটোগ্রাফির নাটকীয়তা, সম্পাদনা, সংগীত ব্যবহার করে তিনি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক বার্তাযুক্ত সিনেমাকেও কালজয়ী করে তুলেছেন। তাঁর সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান বোধহয় রাজনৈতিক মতাদর্শ ও সিনেমা নির্মাণের কৌশলের মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে পারা।

ক্রমান্বয়ে তাঁর অনবদ্য সকল চলচ্চিত্রের নির্মাণ দেখে বিস্মিত হতে থাকে গোটা বিশ্ব। স্ট্রাইক (১৯২৪), ব্যাটলশিপ পটেমকিন (১৯২৫), অক্টোবর (১৯২৭) এবং আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঐতিহাসিক চলচ্চিত্র 'আলেকজান্দার নেভস্কি' (১৯৩৮) ও ইভান দ্যা টেরিবল (১৯৪৪,১৯৫৮); এই ইভান দ্যা টেরিবল ট্রিলজি বিশ্ব চলচ্চিত্রের প্রথম ও সফলতম ট্রিলজি। ডি.ডব্লিউ.গ্রিফিথ যখন তাঁর ইন্টলারেন্স ‘বার্থ অফ এ নেশন‘ নিয়ে নির্বাক ছবিতে দুনিয়া কাঁপাচ্ছেন তখন এই প্রতিভাবান পরিচালকের আগমন। বলতে গেলে চার্লি চ্যাপলিনের মহাকাব্যিক ফিল্মসমূহ এবং ফ্রিটয ল্যাং এর ‘মেট্রোপলিস’(১৯২৭) -এর হাত ধরেই নির্বাক চলচ্চিত্র সবাক হয়। তাঁরা হলেন যুগসন্ধিক্ষণের চলচ্চিত্র নির্মাতা।

সময়টা ১৯০৫ সাল। ততদিনে রাশান সাম্রাজ্য অস্থির হতে শুরু করেছে। জারের শাসনের বিরুদ্ধে গড়ে উঠতে শুরু করেছে অসন্তোষ। এর প্রভাব পড়ে রাশান নেভির ব্ল্যাক সি ফ্লিট বা কৃষ্ণসাগর নৌবহরেও। সেখানকার জাহাজগুলোর মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে থাকে অসন্তোষ। আবার ১৯০৪-০৫ সালের রুশ-জাপান যুদ্ধের কারণে সে সময়ে ঊর্ধ্বতন অফিসারদের বেশিরভাগ সেখানে ছিলেন না। তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল যুদ্ধক্ষেত্রে, প্রশান্ত মহাসাগরের জাহাজগুলোতে। আর সেখানে সুশিমার যুদ্ধে রাশান নেভির শোচনীয় পরাজয় রাশিয়ার জনগণকে যেমন ক্ষুব্ধ করেছিল, তেমনি উৎসাহিত করেছিল বিপ্লবীদেরও। সব মিলিয়ে ব্ল্যাক সি ফ্লিটের জাহাজগুলোর মধ্যে একটা গোপন শলা-পরামর্শ চলতে থাকে বিদ্রোহ করার। বিদ্রোহ করার দিনক্ষণ ঠিক করা হয় আগস্ট মাস। কিন্তু সেই বিদ্রোহ শুরু হয়ে গেল নির্ধারিত সময়ের আগেই, জুনের শেষে। অনেকটা অপরিকল্পিতভাবেই। এই নৌবহরের অন্যতম জাহাজ ‘পটেমকিন’। জাহাজটা সাগরে ভাসার কয়েকদিন পরেই ২৭ জুন সকালে কয়েকজন নাবিক আবিষ্কার করল, তাদের খাওয়ার জন্য যে গরুর মাংস রাখা আছে, তাতে পোকায় ধরেছে। অভিযোগ জানানো হলো অফিসারদের কাছে। জাহাজের ডাক্তার এসে রায় দিলেন, পোকা ধরায় তেমন কিছুই হয়নি। মাংস এখনো খাওয়া যাবে।
ডাক্তারের এ রায় শুনে পটেমকিনের সাড়ে সাত শ নাবিকের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ল। মাতিউশেঙ্কো ও ভাকুলেনঞ্চুকের নেতৃত্বে নাবিকরা একত্রিত হলো। সিদ্ধান্ত হলো—এই নষ্ট মাংস দিয়ে বানানো খাবার তারা খাবে না। দুপুরে তারা সত্যিই যখন মাংসের স্যুপ খেল না, ক্যাপ্টেন ইভগেনি গোলিকভ সবাইকে জাহাজের ডেকে হাজির করলেন। গোলিকভ এবং তাঁর ফার্স্ট অফিসার গিলিয়ারোভস্কির নিশ্চিত ধারণা হলো, এসব বিদ্রোহীদের ষড়যন্ত্র। মুখোমুখি দাঁড়িয়ে গেল জাহাজের অফিসার এবং সাধারণ নাবিকরা। ব্যাপারটা বিদ্রোহীদের ষড়যন্ত্র না হলেও ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে শুরু হয়ে গেল বিদ্রোহ। আগস্টের বদলে জুনের ২৭ তারিখেই। ডেকে দাঁড়িয়েই, গোলিকভের হুমকি-ধামকির মধ্যে মাতিউশেঙ্কো তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করল। আর আধা ঘণ্টার মধ্যেই পটেমকিন চলে এল নাবিকদের কব্জায়। উড়িয়ে দেওয়া হলো বিপ্লবীদের লাল পতাকা। পটেমকিনের এই বিপ্লবী অভিযাত্রা স্থায়ী হয়েছিল মাত্র ১১ দিন। পরে তারা রোমানিয়ায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে। তবে রুশ বিপ্লবের প্রেক্ষাপটে এই বিদ্রোহকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। এটাকে এখন চিহ্নিত করা হয় এই বিপ্লবের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে। পরে ১৯২৫ সালে, যুদ্ধজাহাজ পটেমকিনের এই বিদ্রোহের পটভূমিতে চলচ্চিত্রকার সের্গেই আইজেনস্টাইন নির্মাণ করেন তাঁর বিখ্যাত চলচ্চিত্র ‘ব্যাটেলশিপ পটেমকিন’। নির্বাক যুগের সাদাকালো এই চলচ্চিত্রটি এখনো চলচ্চিত্রপ্রেমী ও সমালোচকদের কাছে অত্যন্ত সমাদৃত। এমনকি সর্বকালের শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের সংক্ষিপ্ত তালিকাতেও ‘ব্যাটেলশিপ পটেমকিন’ অবিসংবাদিতভাবেই স্থান করে নিয়েছে।

সের্গেই আইজেনস্টাইন নির্মিত প্রথম পূর্ণাঙ্গ চলচ্চিত্র হলো 'আলেকজান্দার নেভস্কি'। চলচ্চিত্রটি নির্মাণে সময় লাগে ১০ বছর। স্তালিনের সময়ে যখন সোভিয়েত ইউনিয়ন ও নাৎসি জার্মানির মধ্যে সংকটময় পরিস্থিতি চলছিল তখন এই চলচ্চিত্র নির্মিত হয়। এই চলচ্চিত্র দুই দেশের মধ্যে চলমান রাজনৈতিক অবস্থা রূপকের মাধ্যমে চিত্রায়িত হয়। তেউতোনিক পদাতিক সৈন্যের শিরণাস্ত্র দেখতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের স্টালহেমের ব্যঙ্গাত্মিক সংস্করণের মত দেখায়। 'আলেকজান্দার নেভস্কি' চলচ্চিত্রের প্রথম পাণ্ডুলিপিতে আক্রমণকারীদের শিরণাস্ত্র স্বস্তিকার মত দেখতে ছিল।

চলচ্চিত্রে অালেকজান্দারকে লোক বীর হিসেবে দেখানো হয়েছে, যে মঙ্গোলদের চেয়ে ভয়াবহ শত্রুর মোকাবেলা করার জন্য তাদের সাথে একটি যুদ্ধ পাশ কাটিয়ে যায়। চলচ্চিত্রটিতে উচ্চমাত্রার লিখন বিরোধী ও ক্যাথলিক বিরোধী বার্তা রয়েছে। সোভিয়েত ঔপন্যাসিক পিওতর পাভ্লিয়েঙ্কা চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য রচনা করেন। প্রযোজক আইজেনস্টাইনের অংশের একপেশে প্রবণতা পরিহার করার জন্য পাভ্লিয়েঙ্কোকে 'উপদেষ্টা' হিসেবে নিয়োগ দেয়। 'অালেকজান্দার নেভস্কি' চলচ্চিত্রটি এর মূল বিষয়বস্তুর উপর জোর দেয়, যেখানে সাধারণ জনগণ রাশিয়াকে বাঁচাতে বদ্ধ পরিকর, অন্যদিকে অভিজাত ও বণিকশ্রেণিকে 'বুর্জোয়া' হিসেবে দেখানো হয়েছে, যারা জনগণের শত্রু কারণ তারা তাদের জন্য কিছুই করছে না। চলচ্চিত্রটি আইজেনস্টাইন পরিচালিত প্রথম সবাক চলচ্চিত্র। যদিও বিঝিন ওগ চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম শব্দের ব্যবহার করেন, কিন্তু নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায় এবং বেশিরভাগ দৃশ্য নষ্ট হয়ে যায়। 'আলেকজান্দার নেভস্কি' চলচ্চিত্রের সঙ্গীতের সুর করেছেন সের্গেই প্রকোফিয়েভ। এই চলচ্চিত্রের নির্মাণ ছিল শব্দের পুর্ণাঙ্গ সমন্বয়। কিছু দৃশ্য প্রকোফিয়েভের সঙ্গীতের ভিত্তিতে চিত্রায়িত হয় এবং কিছু সুর রচিত হয় আইজেনস্টাইনের চিত্রায়নের ভিত্তিতে। প্রকোফিয়েভ এই চলচ্চিত্রের প্রারম্ভিক দৃশ্যায়ন দেখে এই অতুলনীয় সুর সৃষ্টি করেন। চলচ্চিত্রের সম্পাদনাকালীন আইজেনস্টাইন ও প্রকোফিয়েভের মধ্যে দৃঢ় ও সৃজনশীল সমন্বয় সঙ্গীত ও দৃশ্যের সংযোগ ঘটিয়েছে যা এখনো চলচ্চিত্র নির্মাতাদের জন্য আদর্শ হয়ে রয়েছে। এই চলচ্চিত্রের সুর সম্পর্কে লন্ডন সিম্ফনি অর্কেস্ট্রার প্রধান পরিচালক ভালেরি গের্গিয়েভ প্রকোফিয়েভের মন্তব্য হল, "চলচ্চিত্রের জন্য রচিত সর্বশ্রেষ্ঠ সুর।"

চলচ্চিত্রটি ১৯৩৮ সালে ১ ডিসেম্বর মুক্তি পায় এবং দর্শকদের সাড়া লাভ করে। ১৯৩৯ সালের ১৫ এপ্রিল স্টেট কমিটি ফর সিনেম্যাটোগ্রাফির চেয়ারম্যান সেমেন দুকেল্‌স্কি জানায় ছবিটি ২৩,০০০,০০০ জন মানুষ দেখেছিল এবং সেই সময়ে নির্মিত সবচেয়ে জনপ্রিয় চলচ্চিত্র ছিল। ১৯৩৯ সালে ২৩ আগস্টের পর সোভিয়েত ইউনিয়ন জার্মানি ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে আগ্রাসন ও দ্বন্দ্ব পরিহারের লক্ষ্যে মলোতভ-রিবেন্ট্রপ চুক্তিতে স্বাক্ষর করলে 'আলেকজান্দার নেভস্কি' চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু ১৯৪১ সালের ২২ জুন সোভিয়েত ইউনিয়নে জার্মান আগ্রাসনের ফলে পরিস্থিতি পূর্বে অবস্থায় ফেরত গেলে চলচ্চিত্রটি আবার সোভিয়েত ও অন্যান্য পশ্চিমা প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হতে থাকে। সমালোচকদের প্রতিক্রিয়া পর্যালোচনা ভিত্তিক ওয়েবসাইট রটেন টম্যাটোস-এ ১৮ জন সমালোচকের পর্যালোচনার ভিত্তিতে ৮.৮/১০ গড়ে চলচ্চিত্রটির রেটিং স্কোর ৯৪%। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর ফ্রাঙ্ক এস নুজেন্ট ছবিটি সম্পর্কে লিখেন, "আইজেনস্টাইনের যুদ্ধের উত্থাল তরঙ্গ কোন প্রচারণামূলক দামামা থেকে কম ছিল না। তার কর্মীরাও রক্তিম বরফে ফুটকির চেয়ে বেশি নয়।" দ্য গার্ডিয়ান-এর আলেক্স ভন তুনজেলমানও চলচ্চিত্রটিকে 'স্তালিনবাদী প্রচারণা' বলে উল্লেখ করেন।

সের্গেই আইজেনস্টাইন সর্বমোট ২৫ টির মত স্বল্পদৈর্ঘ্য ও পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এবং প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেন। অনেক চলচ্চিত্র গবেষকের কাছে ‘অক্টোবর’ তাঁর সেরা সৃষ্টি। আবার অনেকে বলবেন ‘আলেকজান্দার নেভস্কি’ তাঁর মহাকাব্যিক আর একদল থাকবেন তাঁর দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ‘ব্যাটলশিপ পটেমকিন’ (১৯২৫) এর পক্ষে। 'ব্যাটলশিপ পটেমকিন' চলচ্চিত্রকে তাবৎ দুনিয়ার শুদ্ধতম চলচ্চিত্র ধরা হয়ে থাকে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত