রাজশাহীতে জমে উঠেছে সোনামনিদের কেনাকাটা

প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০১৬, ১২:৩৭

সাহস ডেস্ক

খুশির জোয়ার নিয়ে ঈদ আসছে। এ খুশি শিশুদেরই বেশি থাকে। ঈদের পোশাক ঘিরে তাদের যত জল্পনা-কল্পনা। বড়দের পোশাক কেনা হোক বা না হোক, ছোটদের পোশাক কেনা চাই-ই চাই। অভিভাবকরাও সবচেয়ে আকর্ষণীয় সুন্দর পোশাকটি সন্তানকে কিনে দিতে চান। বাজারে বিভিন্ন রঙ ও নকশায় অলঙ্কৃত শিশুদের পোশাক আসছে। দেশীয় ঐতিহ্যবাহী কাপড় শিশুদের পোশাকে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

দেশের পোশাক প্রতিষ্ঠাগুলোর পাশাপাশি শপিংমলগুলোতে তাই শিশুদের জন্য আলাদা পোশাকের পসরা সাজিয়েছে। দেশীয় পোশাকের প্রতিষ্ঠানগুলো এবারের ঈদে শিশুদের পোশাকের জন্য ঋতুটাও বিবেচনা করেছে। পোশাকে ব্যবহার করা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের নকশা। স্প্রে, টাইডাই, স্ক্রিনপ্রিন্ট এগুলো মিডিয়া হিসেবে ব্যবহার হয়। এ ছাড়া রয়েছে এপলিক, অ্যামব্রয়ডারি, কারচুপি, আড়ি, লেস, কাতান ও হাতের ভরাট কাজ। শহরে তৈরি পোশাকের দোকান, অভিজাত বিপণী ও শপিংমলগুলোকে সাজানো হয়েছে বাহারী সব নামী-দামী পোশাকে। 

শিশুদের আকৃষ্ট করতে তাদের জামা-প্যান্টে প্রজাপতি, কার্টুন, নানান রঙের বাতি ও কার্টুন সিরিজের জনপ্রিয় চরিত্রের নকশা, এমনকি খ্যাতি সম্পন্ন ক্রিকেটার, ফুটবলার ও অভিনেতা-অভিনেত্রীর ছবি ছাপা হয়েছে। শহরের অভিজাত থেকে ফুটপাতের দোকানগুলোতেও শিশুদের পোশাকের মজুদ গড়া হয়েছে সবচেয়ে বেশি। 

ইতোমধ্যে অভিজাত দোকান থেকে শুরু করে ফুটপাতের দোকানেও ক্রেতার ভীড় জমতে শুরু করেছে। অভিভাবকরা আগেই তাদের সোনামনিদের ঈদের পোশাক কিনতে বাজারে নেমে পড়েছেন। ধনী গরীব সকল শ্রেণির মানুষ সামর্থ ও সাধ্য মধ্যে শিশুদের পোশাক কিনছেন। তবে অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে এবার দাম বেড়ে দ্বিগুণ-তিনগুণ করা হয়েছে। ফুটপাতের দোকানেও সুযোগ বুঝে একদরে কেনাবেচা করা হচ্ছে। এর ফলে নিন্ম ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ তাদের শিশুদের পোশাক কিনতেই পকেট খালি করে ফেলছেন।

শহরের আরডিএ মার্কেট, নিউমার্কেট, গণকপাড়া, এসএস টাওয়ার ও জলিলবিশ্বাস পয়েন্ট মার্কেটসহ বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে গড়ে ওঠা ফুটপাত থেকে শুরু করে অভিজাত দোকানগুলোতে শিশু পোশাকের কালেকশনের কোন কমতি নেই। দৃষ্টিকাড়া রঙ আর নামের পোশাকে সাজানো হয়েছে শপিংমল। একটা পোশাক কেনার পর নাম শুনে ও নানা ডিজাইনের কার্টুন দেখে আরও পোশাক কিনে দেওয়ার বায়না ধরছে শিশুরা। এ সুযোগে দোকানীও হাতিয়ে নিচ্ছেন চড়া দাম। 

শহরের মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড় দেখা যায়। বিক্রেতারাও বেচাকেনায় ছিলেন মহাব্যস্ত। ক্রেতা সামলাতে ইতিমধ্যে দোকান কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করেছেন অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক। ইফতারেও সময় ব্যয় করা হচ্ছে কম।

মেয়ে শিশুদের পোশাকের মধ্যে ক্রাফট টপ, ফ্লোর টাচ, বাজিরাও মাস্তানি, কিরণ মালা, ময়ুরপঙ্খি। ছেলে শিশুদের কোটি সেট, মোদি সেট, পটল কুমার, রাজাবাবু, খোকাবাবু, পিকে প্যান্ট বিক্রী হচ্ছে।  

ঈদে অভিজাত পোশাকের দোকানগুলোতে শিশুদের পোশাকের মূল্য সর্বোচ্চ ১২ হাজার এবং সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দোকানীরা। মধ্যমসারীর দোকানেও ৮ হাজার থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত শিশু পোশাক বিক্রি হচ্ছে। ফুটপাতের বা নিম্নবিত্ত দোকানের পোশাকের মূল্য সর্বোচ্চ ১২০০ টাকা থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত করা হয়েছে। এখানে ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী পোশাক মিলছে বলেই ক্রেতারা ছুটছেন এসব প্রতিষ্ঠানে।

নওগাঁ জেলা থেকে আসা বাবু জানান, রাজশাহীতে বাচ্চাদের পোশাকের কালেকশন ভাল থাকে। দামও সাধ্যের মধ্যে থাকে জেনে এসেছেন কিন্তু এসেই দেখেন রাজধানী ঢাকার চেয়েও এখানে চড়া দাম বলা হচ্ছে। তবু বাচ্চার খুশি করতে ড্রেস কিনবেন বলে বিপণীগুলোতে ঘুরছেন। 

বিক্রেতারা জানান, এবার মার্কেটে শিশুদের অনেক পোশাক আমদানী হয়েছে। বাজারের বেচা-কেনাও হচ্ছে বেশ ভালো। পোশাকেই নয়, এসব তৈরি পোশাকের দোকান, বিপণী ও শপিংমলগুলোকেও নানা আলোকসজ্জায় সাজানো হয়েছে। সবমিলিয়ে শিশু পোশাক বিক্রির ধুম পড়ে গেছে রাজশাহীর মার্কেটে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত