গাজীপুর ও রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের যাত্রা শুরু

প্রকাশ : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১২:২০

সাহস ডেস্ক

রংপুর মহানগর পুলিশ (আরপিএমপি) ও গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হলো। দুই মহানগরের বাসিন্দাদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নির্বিঘ্ন রাখতে কাজ করবে।

আজ রবিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রংপুর ও গাজীপুর মহানগর পুলিশের উদ্বোধন করেন। এর মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু হলো পুলিশের এ দু’টি ইউনিটের।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশ বাহিনীকে শক্তিশালী ও আধুনিকায়নের কাজ করছে সরকার। পুলিশের উপর মানুষের আস্থা ফিরেছে। দেশকে উন্নত করে দেশের শান্তি ও নিরাপত্তা উন্নতি করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, উত্তরবঙ্গ অবহেলিত ছিল। আমরা এ অঞ্চলের উন্নয়ন কাজ করছি। রংপুর যেহেতু বিভাগ হয়েছে সেহেতু্ এ এলাকার মানুষকে বিভাগীর সুবিধা যেন পায় তার জন্য মেট্রোপলিটন পুলিশ গঠন করা হয়েছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যার পর ২১ বছর দেশকে পিছিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত হয়েছিল। ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আমরা ক্ষমতায় এসে জনগণের কল্যাণে কাজ করি। তখনই দেশবাসী বুঝতে পারে, সরকার জনগণের জন্য কাজ করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে বেশি কষ্টটা পুলিশকেই করতে হয়। তাদের কোনো কর্মঘণ্টা নেই। মানুষ যখনই চায় তাদের ছুটে যেতে হয়। কিন্তু তারপরও পুলিশের ওপরই আঘাত আসে বেশি।

এসময় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ থেকে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের সময় পুলিশের ওপর আক্রমণের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধে আক্রমণ করা হয় রাজারবাগ পুলিশ লাইনে, এখান থেকেই প্রতিরোধ করা হয় প্রথম।

বিএনপি-জামায়াত জোটের অগ্নিসন্ত্রাসের শিকারও হতে হয়েছে আমাদের পুলিশকে। ৫শ’ নাগরিকের পাশাপাশি আমাদের ২৭ জন পুলিশ কর্মকর্তা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের অগ্নিসন্ত্রাসে।

পুলিশ বাহিনী অত্যন্ত নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে মন থেকে কাজ করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশের ওপর মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস ফিরে এসেছে, যেটা গুরুত্বপূর্ণ। এটা ধরে রেখে এগিয়ে যেতে হবে।

এসময় সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে পুলিশের ভূমিকা ও সাফল্যের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সফলতা ধরে রাখার পাশাপাশি মানুষের সেবায় পুলিশকে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারেরও পরামর্শ দেন সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে আমরা যখন ক্ষমতায় আসি, তখন ২০ ভাগ পুলিশ রেশন পেতো। সেটা আমরা শতভাগ করে দিয়েছি। পুলিশের জন্য চিকিৎসার ভালো ব্যবস্থা ছিল না, আবাসনের ভালো ব্যবস্থা ছিল না। অনেক সীমাবদ্ধতা ছিল। এই বাহিনীর চিকিৎসা-বাসস্থানের উন্নয়নে আমরা নানা পদক্ষেপ নিয়েছি। প্রতিবছরই পুলিশের জন্য বাজেট বাড়াচ্ছি।

কারণ আমরা জানি দেশকে উন্নত করতে হলে মানুষের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা দরকার। আর সেটা করতে হলে পুলিশ বাহিনীকে আধুনিক ও যুগোপযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

তারা মানুষের সেবা দেওয়ার কাজটি করে আসছে, সেজন্য পুলিশ বাহিনীকে ধন্যবাদ জানাই।ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে যেন কারও কাছে হাত পেতে চলতে না হয় সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকারও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালে দেশের সপ্তম বিভাগ প্রতিষ্ঠার পর রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। চালু হওয়া এ মেট্রোপলিটন পুলিশের আওতায় রয়েছে ৬টি থানা। যা হলো- কোতয়ালি, তাজহাট, মাহিগঞ্জ, হারাগাছ, পরশুরাম ও হাজিরহাট থানা।

২৪০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের নতুন এ মেট্রোতে ছয়টি থানা ছাড়াও দু’টি পুলিশ ফাঁড়ি (ধাপ ও নবাবগঞ্জ) রয়েছে। ১ হাজার ১৮৫ জন জনবল ও ১৩০টি যানবাহন নিয়ে নগরবাসীকে সেবা দিতে প্রস্তত রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। ইতোমধ্যেই পুলিশ কমিশনারসহ ৯০ ভাগ জনবল নিজ নিজ পদে যোগ দিয়েছেন।

২০১৩ সালের ১৬ জানুয়ারি গাজীপুর পৌরসভাকে ১১তম সিটি করপোরেশন হিসেবে গেজেট প্রকাশ করে সরকার। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিটি করপোরেশনে মহানগর পুলিশ গঠনে আইনের নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়।

এছাড়া গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের আওতায় থাকবে আটটি থানা। জিএমপির নতুন থানা ও এর অধিভুক্ত এলাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আওতাধীন আটটি নতুন থানা হলো সদর (বর্তমান জয়দেবপুর থানা), বাসন, কোনাবাড়ি, কাশিমপুর, গাছা, পূবাইল, টঙ্গী পূর্ব ও টঙ্গী পশ্চিম থানা।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত