জনপ্রশাসন পদক পেলেন কবির বিন আনোয়ার

প্রকাশ | ২২ জুলাই ২০১৮, ১১:০৯ | আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৮, ১৫:২৯

ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে উল্লেখযোগ্য ও প্রশংসনীয় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘জনপ্রশাসন পদক-২০১৮’ অর্জন করেছেন সিরাজগঞ্জের কৃতি সন্তান পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব কবির বিন আনোয়ার।

২৩ জুলাই (সোমবার) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে কবির বিন আনোয়ারের হাতে জাতীয় পর্যায়ে জনপ্রশাসন পদক তুলে দিবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে ‘প্রকল্প পরিচালক, এটুআই, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে জনসেবা প্রদানে উল্লেখযোগ্য ও প্রশংসনীয় অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ সরকার আপনাকে জাতীয় পর্যায়ে কারিগরি (দলগত) ক্যাটাগরিতে জনপ্রশাসন পদক-২০১৮ প্রদানের জন্য চূড়ান্তভাবে মনোনীত করেছে। এ গৌরবময় অর্জনের জন্য আপনাকে অভিনন্দন।’ 

কবির বিন আনোয়ার ১৯৬৪ সালের ২২ মে (রবিবার), বাংলা ১৩৬২ সালে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় নানার বাড়িতে দুপুর ৩ টার দিকে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব হিসেবে কর্মরত আছেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মহা পরিচালক (প্রশাসন) ও একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) এর প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর পিতা আনোয়ার হোসেন রতু সিরাজগঞ্জ মহকুমা ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে একাধারে ২২ বছর দায়িত্ব পালন করেন। মা সৈয়দা ইসাবেলা একাধারে কথাসাহিত্যিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, শিক্ষক।       

পিতামহ- আব্দুস সামাদ মিয়া, ত্রিশের দশকে কলকাতা থেকে গ্র্যাজুয়েশন করে পাবনা ও সিরাজগঞ্জে আইন পেশায় নিয়োজিত হন। মাতামহ- সৈয়দ ইসহাক নিরাজী ছিলেন সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী’র সহোদর ভাই, শিক্ষক ও সঙ্গীতজ্ঞ। পিতা- আনোয়ার হোসেন রতু সিরাজগঞ্জ জেলার প্রবীণতম রাজনীতিক, খেলোয়াড় ও সংস্কৃতিসেবী। একাত্তরে সিরাজগঞ্জ মহকুমার সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক হিসেবে কাজ করেন। তাছাড়া তিনি সিরাজগঞ্জ মহকুমা ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে একাধারে ২২ বছর দায়িত্ব পালন করেন। মাতা- সৈয়দা ইসাবেলা একাধারে কথাসাহিত্যিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, শিক্ষক। এ পর্যন্ত প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ১৫টি।

শিক্ষা 
১৯৭২ সালে ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুলে ভর্তি, হোস্টেলে থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাশ। ১৯৮০ সালে শিক্ষকগণ কর্তৃক নির্বাচিত হয়ে কলেজ প্রিফেক্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন। অতঃপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি। ১৯৮২ থেকে সামরিক শাসন বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ। ১৯৮৫-১৯৮৮ পর্যন্ত ছাত্রলীগ ফজলুল হক হল শাখার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন।

কর্মজীবন
১৯৮৮ তে সিভিল সার্ভিসে (প্রশাসন) (৭ম ব্যাচ) যোগদান। একযুগ মাঠ পর্যায়ে, অর্ধযুগ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ৩ বছর নেদারল্যান্ডস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে প্রথম সচিব হিসেবে অতঃপর রাঙামাটি বরকল উপজেলা নির্বাহী অফিসার। পরবর্তী সময়ে অর্থ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মহা পরিচালক (প্রশাসন) হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব হিসেবে কর্মরত আছেন।

পরিবেশ-প্রতিবেশ ব্যবস্থার সঙ্গে জীবন-জীবিকার, সভ্যতা ও সংস্কৃতির মেলবন্ধনের মাধ্যমে সরাসরি জনগোষ্ঠীর দাঁড়প্রান্তে এর সুফল পৌছে দিতে কবির বিন আনোয়ার নিজের মুক্তিযোদ্ধা মাতার নামে সম্পূর্ণ স্বেচ্ছামূলক একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করেছেন। প্রতিষ্ঠানটি ‘ইসাবেলা ফাউন্ডেশন’ নামে তার কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। প্রতিষ্ঠানটি ‘নদী ও জীবনের সন্ধানে’, ‘সমুদ্র ও জীবনের সন্ধানে’ এবং ‘পাহাড় ও জীবনের সন্ধানে’ নামে তিনটি বৃহৎ কর্মসূচী হাতে নিয়ে কাজ করছে।

ঢাকার চারপাশের দখল-দূষণের শিকার নদীগুলোকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে চালিয়ে যাচ্ছেন অক্লান্ত প্রচেষ্টা। সরকারের পরিবেশ বিষয়ক কমিটিগুলোর জাতীয় পর্যায়ে নেতৃত্বও দিচ্ছেন কবির বিন আনোয়ার। হালদা নদীর পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও মাছের জাত সংরক্ষণে নেতৃত্ব দেয়া জাতীয় কমিটির তত্বাবধানকারী তিনি। 

কবির বিন আনোয়ার একটি কথা বারবার বলেন, একটি সুন্দর পরিবেশ-প্রতিবেশ দেওয়ার মাধ্যমেই তরুণদের যোগ্য নেতৃত্বের অধিকারী করে গড়ে তোলা সম্ভব। 

এছাড়াও তিনি আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম সিরাজগঞ্জ জেলা শাখা, সাঁকো প্রতিবন্ধী স্কুল সিরাজগঞ্জ এবং জুয়েল অক্সফোর্ড স্কুল সিরাজগঞ্জ এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্বপালনরত। পথশিশুদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মজার ইশকুল এর পৃষ্ঠপোষক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন।

জনপ্রশাসন পদক পাওয়ায় কবির বিন আনোয়ারকে সাহস২৪.কম পরিবারের পক্ষ থেকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। আগামীর পথচলা আরো সুন্দর হোক।