সাতক্ষীরায় বোরো ধানে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ

প্রকাশ : ১১ এপ্রিল ২০১৮, ২১:২২

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

ধান পাকার সময়ে ব্লাস্ট রোগ দেখা দেওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন সাতক্ষীরার বোরো চাষিরা। ব্লাস্ট নামক এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর আধাপাকা ধান চিটা হয়ে যাচ্ছে। ফলে রীতিমত পথে নামতে বসেছে ঋণ নিয়ে বোরো ধান চাষ করা কৃষকরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ বলছে- জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মূলত বোরো ধানে ব্লাস্ট রোগ দেখা দিচ্ছে।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাগবাটি গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান, মতিয়ার রহমান, পাশ্ববর্তী রইচপুর গ্রামের গোলাম হোসেন ও আবুল হাসান জানান, তারা প্রত্যেকই চলতি মৌসুমে ৫ থেকে ৬ বিঘা পরিমান জমিতে বোরো ধান চাষ করেছেন। শুরু থেকে সবধরনের পরিচর্চা করেছেন। এতে বিঘা প্রতি ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ক্ষেতের ধানও প্রায় আধা পাকা হয়ে গেছে। কিন্ত ৪/৫ দিন ধরে ধানেরশীষ শুকিয়ে ভিতরে চিটা হয়ে যাচ্ছে।

স্থানীয় কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা রঘুনাথ গুহ জানান, বোরো ক্ষেতে ব্লাস্ট রোগ দেখা দেওয়ার পর ওইসব গ্রামে পৌঁছে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে এটি দ্রুত কমে যাবে।

একই অবস্থা জেলার তালা উপজেলার বাইগুনি গ্রামের বোরো চাষিদের। এই গ্রামের বোরো চাষি শিবপদ দাশ জানান, চলতি মৌসুমে ৫ বিঘা জমিতে ব্রি-ধান ২৮ জাত চাষ করেন। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই আধা পাকা ধান চিঠা হয়ে যাচ্ছে

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যানুযায়ী চলতি ২০১৭-১৮ মৌসুমে সাতক্ষীরার সাতটি উপজেলাতে সরকারিভাবে বোরো চাল উৎপাদন লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ২২৬ মেট্রিকটন। এরমধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলাতে ৯৭ হাজার ৫১৭ টন, কলারোয়ায় ৪৮ হাজার ৪৮৫ টন, তালায় ৭৩ হাজার ৭৮ টন, দেবহাটায় ২৫ হাজার ১৮৯ টন, কালিগঞ্জে ২১ হাজার ৭৯৬ টন, আশাশুনিতে ২৭ হাজার ৫৪৪ টন এবং শ্যামনগরে ৬ হাজার ৭১৭ টন। এই লক্ষ্যমাত্রা সামনে রেখে চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরাতে সাড়ে ৭৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ করা হয়েছে।

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কাজী মো. আব্দুল মান্নান বোরো ক্ষেতে ব্লাস্ট রোগ দেখা দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, যে সব এলাকা ব্লাস্ট রোগ দেখা দিচ্ছে বোরো ক্ষেতে সাথে সাথেই উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সেখানে পাঠিয়ে মরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে খুব শীঘ্রই এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।

সাহস২৪.কম/রিয়াজ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত