সন্দ্বীপে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে যুবককে মারধর

প্রকাশ : ৩০ জুন ২০১৭, ২২:০৪

সাহস ডেস্ক

ধর্ম অবমাননার অজুহাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ছাত্র নয়ন মজুমদারকে মারধর করা হয়েছে। 

২৮ জুন চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের সন্তোষপুর ইউনিয়নে এই ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্থানীয় মুন্সিরহাটে শত শত মানুষের সামনে নয়নকে তার ফেসবুক কমেন্টের জন্য ক্ষমা চাইতে বললে নয়ন ক্ষমা চেয়ে বলেন, আমার কমেন্টে কারো মনে আঘাত দিয়ে থাকলে সেজন্য আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী। এসময় বিশ ত্রিশজন যুবক নয়নকে এলোপাথারি মারধর শুরু করলে তিনি জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

জানা যায়, সন্তোষপুর ৪ নং ওয়ার্ডের রঙ্গনী বাড়ির নিরঞ্জন মজুমদারের ছেলে নয়ন মজুমদার গত ২৬ জুন তার ফেসবুকে সুলতানা কামালের একটি আলোচিত বক্তব্যকে সমর্থন দিয়ে স্ট্যাটাস দেয়। এতে স্থানীয় এক মাদ্রাসাছাত্র এর প্রতিকারের জন্য লোকজনকে উদ্বুদ্ধ করে। তাদের সাথে সন্তোষপুর কাছেমুল উলুম মাদ্রাসার দু’ মাওলানা যুক্ত হন। নয়ন ধর্মবিরোধী প্রচার করে অজুহাতে তার বাড়িঘরে হামলার জন্য তারা যুবসমাজের প্রতি আহবান জানান।

এলাকার কিছু মানুষ তাদেরকে বিষয়টি সামাজিকভাবে সমাধানের জন্য বলেন এবং সে মোতাবেক উদ্যোগ নেয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নয়নকে স্থানীয় মুন্সিরহাটে উপস্থিত করে তার অপরাধের জন্য ক্ষমা চাইতে বলা হয়। এসময় কিছু যুবক নয়নকে মারধর শুরু করে।

সন্তোষপুর ইউপির সাবেক মেম্বার ও উপজেলা যুবলীগ নেতা মো. সেলিম বলেন, ‘শিবিরের চিহ্নিত কিছু যুবককে প্রতিরোধ করা না হলে নয়ন মারাও যেতে পারেতন।’

ঘটনার মীমাংসার বিষয়ে তিনি বলেন, যতদূর জানি মীমাংসার বিষয়টি এসেছে নয়নের পরিবারকে বিপদের হাত থেকে বাঁচাতে, চক্রান্তকারীরা চেয়েছিল ইস্যুটিকে বড় করে হিন্দু পাড়ায় হামলা করতে।

তিনি আরো বলেন, মূলত আওয়ামী লীগ সমর্থক নয়নকে এবং স্থানীয় হিন্দুদের ভয়ভীতি দেখিয়ে একঘরে করাই ছিল ঘটনার মূল উদ্দেশ্য।

নয়নের বাবা নিরঞ্জন মজুমদার বলেন, ছেলের সাথে আমার কথা হয়েছে, সে বলেছে তার এই লেখার পেছনে কাউকে আঘাত করাটা উদ্দেশ্য ছিল না। কেবল দেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে একটি জাতীয় আলোচিত বিষয়ে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেছিল সে।

সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ঘটনাটি তার জানা নেই। তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত