তিস্তার বালুচরে পিট পদ্ধতিতে কৃষি বিপ্লব

প্রকাশ : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৩:৫২

আসাদুজ্জামান সাজু

লালমনিরহাটে তিস্তা ও ধরলা নদীর তীরবর্তী মানুষজন নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়ে জমি ও বসত-বাড়ি হারিয়ে পথে বসেছেন। বাঁধের পাশে, রেল পথের ধারে ঝুপড়ি ঘর করে আশ্রয় নিয়ে জীবন কাটাচ্ছেন। আবার অনেকে বালুচরে আশ্রয় নিয়ে জীবন যুদ্ধে নেমেছেন। তিস্তা ও ধরলা নদী বুকে জেগে ওঠা বালু চরে পিট পদ্ধাতিতে ফসল ফলানোর স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে তারা।

গবেষণার ভিত্তিতে কৃষি উৎপাদন ও ভূমিহীন কৃষকদের জীবনমান উন্নয়নকে সামনে রেখে কৃষি অধিদপ্তর কাজ শুরু করেন। শুরুতেই অনাবাদি ও পড়ে থাকা বালুচরে পিট পদ্ধতিতে মিষ্টি কুমড়া, লাউ ও শসা চাষে মিলেছে সফলতা। 

তিস্তা নদীর চর এলাকাগুলো ঘুরে দেখা যায়, এক সময় তিস্তা নদীর ভাঙ্গনের শিকার হয়ে নিঃস্ব হওয়া পরিবারগুলো জেগে ওঠা চরে মিষ্টি কুমড়া, লাউ ও শসা চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন এখন। তারা অনেকটা সফলতাও পেয়েছেন। এখন তাদের সংসারে আগের মত অভাব অনটন নেই। 

হাতীবান্ধা উপজেলার চর সির্ন্দুনা গ্রামের কৃষক আলতাফ হোসেন জানান, তিস্তার বালুচরে পিট পদ্ধতিতে মিষ্টি কুমড়া ও লাউ চাষে সফলতা পেয়েছে। প্রথমত পিট পদ্ধতি সম্পর্কে ধারনা ছিলো না। কৃষি অফিসের পরামর্শ মতে, বালুর মধ্যে গভীর গর্ত করে অন্যস্থান থেকে কাদা মাটি এনে সাথে গোবর সার ও রাসায়নিক সার মিশ্রিত করে গর্তটি ভরাট করে বীজ রোপন করা হয়। 

ওই এলাকার কৃষক সাফিয়ার রহমান জানান, গত ৩ বছর আগে কৃষি অধিদপ্তরের পরামর্শে প্রথমত পিট পদ্ধতিতে তিস্তা চরে ফসল চাষাবাদের ধারণা পান। সে বছরেই সফলতা পাওয়ায় মিষ্টি কুমড়া, লাউ ও শসা চাষে আগ্রহ বাড়তে থাকে।

হাতীবান্ধা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, দেশের নদী ভাঙ্গন কবলিত হতদরিদ্র মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে এক সময়ের পতিত বালু চরে মিষ্টি কুমড়া, লাউ ও শসা চাষের পিট প্রযুক্তির সফলতা এখন প্রমাণিত। 

হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমিনুল ইসলাম বলেন, জেগে ওঠা তিস্তার বালু চরে মিষ্টি কুমড়া ও লাউ চাষ চরাঞ্চলের মানুষ জনের ভাগ্য বদলে দিয়েছে। বিশাল এ জনগোষ্ঠীকে যদি এ প্রযুক্তির আওতায় আনা যায় তবে কৃষি উৎপাদনসহ সংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ে বিপ্লব ঘটবে।

সাহস২৪.কম/রিয়াজ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত