টাঙ্গাইলে ঘুরে দাঁড়াতেও হোঁচট খাচ্ছেন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক

প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৯:২৫

তপু আহম্মেদ

প্রতি বছরের মতো চলতি বছরেও ভাঙ্গন দিয়েই শুরু হয় যমুনা ও ধলেশ্বরীর বানের পানি প্রবাহ। কিছুদিন চলতে না চলতে উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নেমে আসা পানি আর অতিবৃষ্টির ফলে যমুনা ও ধলেশ্বরীর পানি বিপদসীমার দেড়শ সে:মি: ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। 

উপচে পড়া পানিতে নদীকূলবর্তী এলাকা প্লাবিত হয়ে টাঙ্গাইলের ৯টি উপজেলাতেই বানের পানি ঢুকে পড়ে। তবে ৫টি উপজেলায় পানিবন্দী হয়ে পড়ে লাখ লাখ মানুষ। এসব এলাকায় লোকসানের পরিমানও বেশি। বিশেষ করে জেলার রোপা আমনের অপূরণীয় ক্ষতি হয়। 

বন্যায় ক্ষতি তুলতে ঘুড়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেও বারবার হোঁচট খাচ্ছে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক। দু’দফায় জমিতে চারা লাগানোর পরও বানের পানিতে তলিয়ে দু’বারই নষ্ট হয়েছে রোপা আমনের চারা। নিজের পরিবারের আগাম খাদ্য সংকট ভেবে কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েছে। ফলে আবারো ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে কৃষক। তৃতীয়দফায় জমিতে চারা রোপন করছে কৃষক। যদিও তিনবার রোপন করা খরচের ক্ষতি তুলতে পারবে না তবু জমি অনাবাদী রাখতে চান না তারা।

রোপা আমন, বোনা আমন ও কালিজিরা ধানের ক্ষতি কাটিয়ে তুলতে বাড়ির উঠান ও উচু জায়গায় তৈরী করে রেখেছেন বীজতলা। জমি থেকে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে তৃতীয়বারের মতো কৃষক ধানের চারা রোপন করছেন। এতে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয় ব্রিধান ৪৯, বিআর১১ ও বিনাশাইল আগাম জাতের রোপা আমন, বোনা আমন ও সুগন্ধী ধানের।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার দাইন্যা ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ ওসমান গনী জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয় নিজেদের বাড়ির উঠান ও উচু স্থানে ব্রিধান ৪৬, বিআর ২২ ও কালিজিরার লেট জাতের ধানের বীজতলা তৈরীর। 

এদিকে ধানের চারা সংকট থাকায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের অনেকে নতুন করে জমিতে ধান রোপন করতে পারছেন না। অধিকাংশ কৃষক সরকারি সহযোগিতা পাননি বলেও অভিযোগ করেন।

জেলার একমাত্র কালিহাতী উপজেলার বিভিন্ন বাজারে ধানের চারা পাওয়া যাচ্ছে। যেসব চারার প্রতি আটির মূল্য ছিল ২ থেকে ৩ টাকা বর্তমানে সেই আটি কিনতে হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকায়। ফলে কেউ কেউ এতো মূল্যের চারা কিনে জমিতে ধান রোপন করছেন না।

টাঙ্গাইল জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু আদনান জানান, জেলায় চলতি মৌসুমে ৩২ হাজার ৩শ ৪৫ হেক্টর জমিতে বোনা আমন রোপন ও ৮১ হাজার ৯শ হেক্টর জমিতে রোপা আমন রোপন করা হয়েছিল। এর মধ্যে বেশিরভাগ জমিই তলিয়ে পতিত হয়ে পড়েছে।

তিনি আরো জানান, ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা তৈরী করা হয়েছে। বন্যার পানি নেমে গেছে এখন ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের পুর্নবাসন করা হবে। এছাড়া কৃষকের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকদের চারা ও সারসহ অন্যান্য উপকরণ বিনামুল্যে সরবরাহ করা হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত