লালমনিরহাটে চরাঞ্চলে বিভিন্ন জাতের ফসলের চাষ

প্রকাশ : ১৬ জানুয়ারি ২০১৭, ১২:৩৬

আসাদুজ্জামান সাজু

লালমনিরহাটের ৫ টি উপজেলার অসংখ্য নদীর চরাঞ্চলগুলো এখন জেগেছে। নদী ভাঙন এ জেলাবাসীর একটি বড় অভিশাপ হলেও চরাঞ্চলগুলো জেগে ওঠায় এখানকার মানুষেরা একটু হলেও স্বস্তি ফিরে পাচ্ছেন। কৃষকরা চরাঞ্চলে শুরু করেছে ফসলের চাষ। এ জনপদের ৮৫ ভাগ মানুষই কৃষির উপর নিভরশীল। খড়া-বন্যা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মিলে নানা প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে এখানকার মানুষরা বেঁচে থাকে। বন্যার পর পলিমাটি দ্বারা এখানকার চারাঞ্চলগুলো আবৃত থাকায় কৃষকরা সহজেই যেকোনো ফসল বুনতে পারছেন।

বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় চরাঞ্চলের জমিগুলোতে একই সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করা সম্ভব হয়েছে। সমতলে ইরি-বোরো চাষসহ বালিমাটিতে চাষ করা হচ্ছে নানা ধরনের রবিশস্য।

অন্যান্য এলাকাগুলোর মধ্যে জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার চরাঞ্চলে দেখা গেছে, কৃষকদের সাফল্য। একরের পর একর জমিতে চাষ করা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফসল।

হাতীবান্ধা উপজেলার হলদীবাড়ী চরের আমজাদ হোসেন, সুধা বাবু, করিম মোল্লা বলেন, চরাঞ্চলে একই জমিতে একই সঙ্গে ৬/৭ প্রকার ফসল চাষে আমরা লাভবান হয়েছি। তারা জানান, তারা প্রথমে আঁখ চাষের জন্য জমি তৈরি করেন। পরে ওই জমিতে প্লট তৈরি করে লালশাক, পাট, কলমি শাক, আলু, রসুন চাষ করেন। এখন ভুট্রা চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এসব সবজি রোপণের ১৫ দিন পর সারিবদ্ধভাবে বাদাম, মরিচ, ঢেঁড়স, ও পুইশাক ডাল, বপন করেন। বপনের এক মাসের মধ্যে এসব শাক-সবজি বাজারে বিক্রি করে তারা মুনাফা অর্জন করেছেন বলে জানান।

চর ডাউয়াবী এলাকার মনজাত প্রায় ২ বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করে তা বিক্রি করে এবার কয়েক ৫০ হাজার টাকা উর্পাজন করেছেন। তিনি কলা ও ভুট্টা চাষ করে আরও অধিক মুনাফা অর্জনের স্বপ্ন দেখছেন। একই এলাকার কৃষকপুত্র আল আমিন জানান, তাদের বাড়ির কেউ চাকরিজীবী না হলেও চারাঞ্চলের জমিতে কলা, শাক-সবজি, গম ও ভুট্টার আবাদেই তাদের পরিবারের মূল উৎস।

লালমনিরহাট কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিদু ভুষন রায় জানান, চরাঞ্চলের জমি ভুট্টা, গম ও আঁখ চাষে উপযোগী হলেও কৃষকরা এসব জমিতে বাড়তি শাক-সবজি চাষ করে নিজেদের খাওয়ার চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করে বাড়তি আয় করছেন। এতে করে ভুট্টা ও আঁখের জমির পরিচর্যা বেড়ে গিয়ে এসব ফসলের ফলন ভালো হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত